দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শুক্রবার হুগলির বলাগড়ের সভা-মঞ্চ থেকে এক হাত নিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নাম না করে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেনজির আক্রমণ শানালেন। শুভেন্দু বললেন “অনিল বসুও কটু কথা বলেছিলেন। মানুষ মেনে নেননি। আরও এক জনপ্রতিনিধি আমাকে কটু কথা বলেছেন। আপনারা কি তাঁকেও সমর্থন করবেন?” প্রকাশ্য সভা থেকে যেভাবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে কটুক্তি করেছিলেন ঠিক সেভাবেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন শুভেন্দু অধিকারী।
গতকালের রামনগরের বক্তৃতার পর শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে এখনও তৃণমূলে জল্পনা অব্যাহত। পুজোর আগে থেকেই শাসক দলে ‘শুভেন্দু’দয় হচ্ছে না। বরং শাসকদলের নানাভাবে সমালোচনা করেছেন তিনি। এমনকী এক মঞ্চ থেকে তৃণমূলের শীর্ষস্তরের কয়েকজন নেতার নামেও বিস্ফোরক মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে নন্দীগ্রামের তৃণমূলের বিধায়ককে।
আর এই থেকেই শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়তে পারেন বলেও জোরদার জল্পনা তৈরি হয়। গত কয়েক মাসে দলের ব্যানার ছাড়াই সভা-সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন তিনি। এমনকি ‘দাদার অনুগামী’ লেখা ব্যানার মঞ্চে নিয়েই একাধিক সভায় চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন শাসক-শিবিরকে। এবার সেই পোস্টার, ব্যানার নামতেও তৃণমূলকে অ্যাক্টিভ রোল পালন করতে দেখা গেল।
সম্প্রতি শ্রীরামপুরের একটি সভাগৃহে শুভেন্দু অধিকারীর এই মনোভাবের কড়া সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছিল শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ”দাদার অনুগামী হলে দাদার সঙ্গে চলে যা।’ এরই পাশাপাশি শুভেন্দুকে বিঁধে তিনি আর বলেন, ”’মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামের গাছের তলায় বড় হয়েছিস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে মিউনিসিপ্যালিটিতে আলু বিক্রি করতিস।”
কদিন চুপ থাকার পর শুক্রবার বলাগড়ের সভায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই মন্তব্যের নাম না করে জবাব দিলেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ”অনিল বসুও কটু কথা বলেছিলেন। মানুষ মেনে নেননি। আরও এক জনপ্রতিনিধি আমাকে কটু কথা বলেছেন। আপনারা কি তাঁকেও সমর্থন করবেন?” আর শুভেন্দুর এই কথার জবাবে কল্যাণবাবুর মন্তব্য “পরিবার কে আশ্রয় করে উঁচুতে উঠিনি। নন্দীগ্রামের সিবিআই অর্ডার না বের করলে বাড়ি থেকেই বের হতে পারতো না। দলের ভেতরে থেকেই দলের সমালোচনা করলে বোঝাই যায় ভেতরে ভেতরে অন্য দলের সাথে আঁতাত তৈরি হয়েছে”।
শুভেন্দু বাবু গতকাল রামনগরের সভা থেকে জানিয়েছিলেন যে, যে দলে তিনি রয়েছেন , যে দলের জন্যে তিনি আজ পরিবহন মন্ত্রী, সেই দলে থেকে তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করতে পারব না। এই নীতি আমার নয়। আমি কোকিল নই। আমি মানুষের সেবক। আর মানুষের সেবক হয়েই থাকতে চাই। মুখ্যমন্ত্রীও আমায় তাড়ায় নি আমিও দল ছাড়িনি।”
উল্লেখ্য, দলীয় সূত্রে খবর সৌগত রায় আবার শুভেন্দু বাবুর সাথে আলোচনা বসবেন। এখনো অবধি যা গতি প্রকৃতি তাতে শুভেন্দু বাবুর দলে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। দেখা যাক আগে আগে কী হয়, তবে কল্যাণ বনাম শুভেন্দু যে শাসকদলের “অকল্যাণ’ মূলক ঘটনা সে কথা বলাই বাহুল্য।