দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শনিবার সকালে ছটপুজো উপলক্ষে নৌকায় গঙ্গা ভ্রমণের সময়ে বিস্ফোরক মন্তব্য বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং এর। তিনি বলেছেন, ‘শুধু শুভেন্দু অধিকারীই নয়, সৌগত রায়-সহ অন্তত ৫ জন তৃণমূল সাংসদ যে কোনও সময়ে ইস্তফা দিয়ে বিজেপিতে যোগদানের জন্য প্রস্তুত। এটা শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।’ এমনিতেই তৃণমূল শুভেন্দু-সমস্যাতে জর্জরিত। আর এরই মাঝে সেই সমস্যাতে নতুন মাত্রা যোগ করলেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।
ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বিতর্ক নতুন নতুন দিক নিচ্ছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কটু’ কথার জবাবে অনিল বসুর প্রসঙ্গ এনে ‘জন সমর্থন’ আদায় করতে দেখা গিয়েছে শুভেন্দুকে বলাগরের সভায়। তাহলে কী দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে? অনাস্থা তৈরি হচ্ছে? তবে কি এবার তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে পা রেখে নতুনভাবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করার কথা ভাবছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম বিশ্বস্ত সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী? এমনই নানা জল্পনা চলছিল জননেতাকে নিয়ে। তিনিই জিইয়ে রাখছিলেন জল্পনা। অরাজনৈতিক একাধিক সভায় নানা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী। এদিকে ১৯ তারিখ রামনগরের সভা থেকে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীও তাড়াননি, আমিও দল ছাড়িনি।’
এদিকে, তাঁকে দলে টানতে অতি উত্সাহী বঙ্গের পদ্মশিবির। কারণ, মুকুল রায়ের পর শুভেন্দু অধিকারীর মতো জনপ্রিয় নেতা, সংগঠককে পেলে একুশের লড়াইয়ে তাদের শক্তি অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করে বিজেপি নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেই শুভেন্দু অধিকারীরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই তালিকায় এবার সৌগত রায়ের নামও জুড়লেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক, বর্তমান বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়-সহ ৫ জন তৃণমূল সাংসদ যে কোনও সময়ে শিবির বদলাতে প্রস্তুত, এই মন্তব্যের পর অর্জুন আরও বললেন, ‘শুভেন্দু অধিকারীর মতো জননেতা যদি তৃণমূল ছেড়ে দেন, সরকার পড়ে যাবে। তৃণমূলের আর কোনও শক্তি থাকবে না।’
অর্জুন সিংয়ের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় প্রথমে তাঁর ‘দিবাস্বপ্ন’ বলে উড়িয়ে দিলেও পরে তাঁর তীব্র প্রতিক্রিয়া, ‘আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব, মরে যাব। তবু বিজেপিতে কিছুতেই যাব না। কারণ, বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলেই আমি মনে করি। তার বিরুদ্ধে লড়াই সবসময় জারি থাকবে। উনি যা বলছেন, তা বিজেপির মিথ্যা প্রচার, গুজব উসকে দেওয়ার নীতি।’