দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: এবার কি তবে বঙ্গ রাজনীতিতে পা রাখতে চলেছেন সৌরভ গাঙ্গুলী! রাজ্য রাজনীতিতে গুঞ্জন ক্রমশ গাঢ় হচ্ছে। তবে রাজনীতিতে যোগদান নিয়ে সরাসরি হ্যাঁ বা মন্তব্য না করলেও ভারতীয় বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই আচরণ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে ‘হাইলি সাসপিসাস’!
ঘটনার সূত্রপাত একটি সাক্ষাৎকার নিয়ে। গত কাল অর্থাত্ শনিবার নিউজ ১৮ বাংলার একটি সাক্ষাৎকারে সৌরভকে তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তাতে হেসে ‘দাদা’ বলেন, ‘আমি কী করব সেটা পরে দেখা যাবে।’
সৌরভের এই ‘কনিফিউজিং’ উত্তরেই গুঞ্জন ক্রমশ বেড়েছে। এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, বরাবরের স্পষ্টবক্তা সৌরভ সম্পূর্ণ উলটো রাস্তায় হাঁটছেন কেন? স্পষ্ট করে হ্যাঁ বা না বলার থেকে এড়িয়ে গিয়ে জল্পনা আরও জিইয়ে রাখলেন। বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য, সৌরভ যদি রাজনীতিতে যোগ না দিতেন, তাহলে নিশ্চয়ই সরাসরি ‘না’ বলতেন। আর এখন এই নিয়েই রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতির ‘লড়াইয়ের ময়দানে’ সৌরভের প্রবেশ নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। বিশেষ করে গত বছর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষে বসার পর থেকে সেই জল্পনা ক্রমশ বাড়ছে। এরই মাঝে মহারাজের ৪৮ তম জন্মদিনে সৌরভের স্ত্রী ডোনার ইঙ্গিতবহ মন্তব্যে সেই জল্পনার হাওয়া আরও জোর হয়। রাজ্য বিজেপির ‘মুখ’ হয়ে উঠবেন কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে ডোনা জানিয়েছিলেন, “সৌরভ যে পিচেই খেলেন, সেখানেই শীর্ষে থাকেন।” সুতরাং রাজনীতিতে যোগ দিলে সেখানেও সৌরভ ‘শীর্ষে’ থাকবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছিলেন ডোনা। এর পাশাপাশি ডোনা এও জানান যে, সৌরভ রাজনীতিতে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিনা, সে বিষয়ে তিনি নিজেও কিছু জানেন না।
সৌরিভের জন্মদিনের সেই সেই জল্পনার রেশ মিটতে না মিটতেই নিউ টাউনে রাজ্য সরকার যে জমি দিয়েছিল, তা ফিরিয়ে দেন সৌরভ। তবে কী কারণে জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন, তা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। এমন কী সৌরভও অফিশিয়ালি কিছুই জানাননি। তবে সৌরভের ঘনিষ্ঠ-মহল সূত্রে জানা গিয়েছে জমি ঘিরে মামলা হওয়ায় তা ছেড়ে দিয়েছেন সৌরভ। এরপর দুর্গাপুজোর ষষ্ঠীর সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানে ” ডোনা” পারফর্ম করেছিলেন। এতেও বেড়েছিল সৌরভের বিজেপি তে যোগদানের জল্পনা।
এরপরে নভেম্বরের শুরুতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বঙ্গ সফরে এলে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে সৌরভ এবং শুভেন্দু অধিকারী মধ্যে যেকোনো একজন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চলেছেন কিনা। আর তাতে হেঁয়ালি করে শাহ জানিয়েছিলেন, সেই তালিকা অনেক লম্বা। অর্থাৎ অমিত শাহ’র দেখিয়ে দেওয়া সেই পথে হেঁটেই জল্পনা জিইয়ে রাখলেন সৌরভ, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।