দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: এইচআরবিসির সরকারি পদ থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই তিনি সফরে গিয়েছিলেন, আজ শুক্রবার সকালে তাঁর যাবতীয় সরকারী নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার কথা জানা যায়। আর আজ ঠিক দুপর দেড়টায় তাঁর পদত্যাগ পত্র প্রকাশ্যে আসে। ২০২১ ভোটের আগে বাংলার রাজনীতিতে চরম শোরগোল ফেলে দিয়ে বাংলার পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীত্ব ছাড়ার বড় সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন।
উল্লেখ্য শুভেন্দুবাবু জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে স্পর্শকাতরতা রয়েছে। ফলে পাইলট কার ছেড়ে দেওয়াটা কম তাত্পর্যের নয়। বাংলায় তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই পুলিশি নিরাপত্তা পান শুভেন্দুবাবু। কারণ, নন্দীগ্রামে আন্দোলনের পর থেকেই তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রশাসনের আশঙ্কা ছিল। তা ছাড়া ২০০৭ সালে এ ব্যাপারে হাইকোর্টের একটি নির্দেশও ছিল। পরবর্তীকালে জঙ্গলমহলে সংগঠন বাড়ানোর জন্য শুভেন্দুর উপরে ভরসা করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে মাওবাদী হানার আশঙ্কা ছিল অতিমাত্রায়। শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রে আগেও জানা গিয়েছে, সে সময়ে শুভেন্দুর নিরাপত্তা নিয়ে তাঁকে ফোন করে সতর্ক করতেন তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।


অন্যদিকে ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার আগে তত্কালীন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা ইউপিএ সরকারের নম্বর টু ব্যক্তি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুভেন্দুর নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে দিল্লিও রাজ্যকে পরামর্শ দিয়েছিল। যেহেতু শুভেন্দু জঙ্গলমহলে সাংগঠনিক কাজে অতিশয় সক্রিয় ছিলেন সেই কারণে প্রণববাবুও ব্যক্তিগতভাবে শুভেন্দুকে বার বার সতর্ক করেছিলেন। রাজ্য রাজনীতিতে শুভেন্দু অধিকারীর এক অনুগামী এদিন বলেন, অনেকে বলছিলেন, পদ, লালবাতি ছেড়ে কথা বলুক। হয়তো সেটাই শুরু করে দিয়েছেন দাদা।
এবার মন্ত্রীসভা থেকে তাঁর ইস্তফা অনেকেই মনে করছেন তৃণমূলের কফিনে শেষ পেরেকটাই তিনি ঠুকলেন। এর আগে রামনগরের জনসভা থেকে শুভেন্দু বাবু জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক বার্তা দিতে গেলে মন্ত্রীত্ব ছাড়তে হবে। আর হয়তো পুজোর আগে থেকে যে কথা গুলো তিনি প্রকাশ্যে বলতে পারেন নি, সেই কথা গুলো এবার বলার জন্যেই তিনি তাঁর পদত্যাগ করলেন। তবে এখনো তিনি দলত্যাগ করেন নি বা বিধায়ক পদ তিনি এখনো ছাড়েন নি। আজ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তিনি এই পদত্যাগের কথা জানান। মন্ত্রীত্বে থেকে কেনো অরাজনৈতিক সভা সেই বিতর্কের প্রসঙ্গে তিনি এই পদত্যাগ করেছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলের খবর।
অন্যদিকে আজ রাজ্য জুড়েই শুভেন্দু অধিকারীর নামে পোস্টার পড়তে থাকে। আজ কার্শিয়াং এও শুভেন্দু বাবুর নামে পোস্টার পড়ে। সৌগত রায় দুবার শুভেন্দু বাবুর সাথে আলোচনা বসেছিলেন কিন্তু সূত্রের খবর, সেই বৈঠক গুলইতে কোনো সমাধান সুত্র মেলে নি। অন্যদিকে আজ কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহির গোস্বামী আজ বিজেপিতে যোগদান করছেন। মিহির বাবু এই মূহুর্তে নিশীথ প্রামানিকের বাড়িতে রয়েছেন বিকেলে বিজেপির সদর দপ্তরে গিয়ে যোগ দান করবেন।