দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের জবাবেই কী আজ মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী, এ কথাই এখন রাজ্য রাজনীতির অন্দরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর আগে তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছিল যে কেন মন্ত্রীত্বে থাকাকালীন বিভিন্ন অরাজনৈতিক সভা থেকে শুভেন্দু বাবু বক্তব্য রাখছেন। আর এই প্রশ্ন ওঠার পরপরই শুভেন্দু পদত্যাগ করে আজ বুঝিয়ে দিলেন পদে না থেকেও বিধায়ক হয়েই মানুষের হয়ে কাজ করতেচান তিনি। অন্যদিকে সূত্রের খবর এই পদত্যাগের চিঠি হাতে পাওয়ার পরেই এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে টেলিফোন করে কথা বলেছেন।
সূত্রের দাবি শুভেন্দু বাবু কেন পদত্যাগ করলেন সেকথা মুখ্যমন্ত্রী তাঁর কাছ থেকে জানতে চেয়েছেন। আজ মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে পদত্যাগের পাশাপাশি তাঁকে মানুষের হয়ে কাজ করতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়ায় তিনি যে কৃতজ্ঞ সেটা উল্লেখ করেছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেন্দু বাবুর এদিন খুব বেশিক্ষণ কথা হয়নি। যদিও রাজনৈতিক মহলের মন্তব্য শুভেন্দু বাবুকে মুখ্যমন্ত্রীর এই ফোন করা বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ।


অন্যদিকে দলের শীর্ষ নেতা সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে দু-দুবার বৈঠক হয়েছে শুভেন্দু বাবুর। কিন্তু ওই বৈঠকেও সেরকম কোনো সমাধান সূত্র বের হয়ে আসেনি। তখন মনে করা হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী হয়তো শুভেন্দুকে টেলিফোন করে কথা বলবেন। কিন্তু তখন তিনি সেটা তিনি করেননি। এমন কী দলের পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করার যে দাবি শুভেন্দুবাবু রেখেছিলেন সেটাও নস্যাত্ করে বরং বাঁকুড়ার সভা থেকে ‘হুশিয়ারি’ দিয়েছেন। অন্যদিকে শুভেন্দু বাবু বিভিন্ন জায়গাতে এও বলেছেন যে ‘তিনি যা বলার তা দলনেত্রীকেই বলবেন।” তবে সেই বলার দিন অবশেষে এল। আরা তা এলো মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পর।




বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের দুই নেতা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি যেভাবে চাঁচাছোলা ভাষায় শুভেন্দু বাবুকে আক্রমণ করেছেন তা উত্তরে শুভেন্দু বাবু মার্জিত ভাষায় প্রত্যুত্তর দিয়েছেন যে এসব বিষয়ে উত্তর তিনি মন্ত্রীর পদে থেকে দিতে পারবেন না। আর ঠিক এর পরপরেই তিনি প্রথমে এইচআরবিসি (HRBC) এবং আজ মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন। সেইসঙ্গে ছেড়ে দিয়েছেন হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ এর চেয়ারম্যানের পদও। আসলে মেদিনীপুরের এই সংসদ এভাবেই বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, নিজের আত্মসম্মান বহাল রাখতে তিনি পদ ছাড়তে এক মুহূর্ত ভাবেন না। এই ক্ষমতা দখলের প্রতি তাঁর বিন্দুমাত্রও আগ্রহ নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রীর মুল্যবান টেলিফোনটি আসতে যে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে তা আজ স্বচ্ছ কাঁচের মত পরিষ্কার।