দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ সাতগাছিয়ার সভা থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রথম থেকেই আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন নির্বাচন লড়তে জানে তৃণমূল। সময় এলে আমরা তা লড়ে নেব। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়ার জনসভা থেকেই এভাবেই নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা আবহে প্রচারে নেমেই তিনি বলেন, এই ডায়মন্ড হারবারের মানুষ আমাকে ২০১৯-এ জয়ী করেছিলেন। আপনাদের আশীর্বাদ নিয়েই ২০২১ এর প্রচার শুরু করতে চাই।
আজ বক্তব্যের প্রথমেই বেশ কয়েকদিন ধরে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কিত ‘ভাইপো’ প্রসঙ্গ টেনে এনে অভিষেক বলেন সকলেই ‘ভাইপো’ বলছে কিন্তু কারোর বুকের পাটা নেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর নাম নেওয়ার। এ প্রসঙ্গে অভিষেক জানান যে লোকসভা নির্বাচনে এই ডায়মন্ডহারবার লোকসভাতে মোদীও মিটিং করেছিল কিন্তু সে সভাতে নাম ধরে বলার সাহস পায় নি। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন যে মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই তাকে নিশানা করেছিলেন। বলেছিলেন, বিশ্ব বাংলা কোম্পানির মালিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মুকুল রায়কে হাইকোর্টে টেনে এনে গোহারা হরিয়েছেন। আমাকে দিলীপ ঘোষ, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, রাহুল সিনহা থেকে শুরু করে মোদী-শাহরাও নিশানা করেছিল। তিনিও তাদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন।
অভিষেক বলেন, ভয় পেয়ে এখন আর আমার নাম নিচ্ছে না বিজেপি। বিজেপি-সহ সব দলের নেতারা এখন ভাইপো বলে নিশানা করছে। আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি, বুকের পাটা থাকলে আমার নাম নিয়ে দেখান। টানতে চানতে হাইকোর্টে এনে এর জবাব দেব। আমি নাম করেই বলছি দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বহিরাগত। আকাশ বিজয়বর্গীয় গুন্ডা। আপনাদের সাহস থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করুন।
অভিষেক বলেন, আমি তৃণমূল, আমি যা বলি তাই করি। আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি ডায়মন্ড হারবারের সমস্ত মানুষ যাতে পানীয় জল পায়, তার ব্যবস্থা করব। কথা যখন দিচ্ছি, প্রতিশ্রুতি পূরণ আমরা করবই। মোদী-শাহরা কথা দিয়ে কথা রাখে না। প্রত্যেকের অ্যাকউন্টে আজও ১৫ লক্ষ টাকা করে আসেনি। নকল রাজনীতি চলবে না। আমি আগামী ৩ মাসের মধ্যে চারটি ব্লকের সব জায়গায় পানীয় জলের কল বসিয়ে দেব।
অভিষেক আরও বলেন যে, লড়াই হোক উন্নয়ন নিয়ে। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার কী উন্নয়ন করেছেন, আর দিল্লিতে মোদী সরকার দেশের বুকে কী উন্নয়নের বীজ পুতেছেন, তার লড়াই হোক। তাহলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে, কারা উন্নয়নের পূজারি। উন্নয়ন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজও বলছি, মানুষের উন্নয়নের সঙ্গে কোনও আপোশ হবে না। মমতা নামক সূর্যের সঙ্গে লড়লে ঝলসে যাবেন। অভিষেক বলেন মোদী ভোট দেখে শত্রুদের জবাব দেন। ভোট ছিল বলে পুলওয়ামা কাণ্ডে পাকিস্তান কে জবাব দিয়েছিলেন, অথচ চীন ভারতে ঢুকে বসে আছে, ভোটের অপেক্ষা করছেন মোদী!
আজ নাম না করেই শুভেন্দু ইস্যুতে বলেন তৃণমূলে কেউ প্যারাসুটে নামে না, লিফটেও ওঠেনা। অধিকারীও ওঠেননি, বন্দ্যোপাধ্যায়ও ওঠেনি। কেউ কেউ অনেক কথা বলছে। আমি প্যারাসুটে নামিনি, লিফটেও উঠিনি। প্যারাস্যুটে উঠলে আমি দক্ষিণ কলকাতায় প্রার্থী হতাম। কিংবা ৩৫টি পদে থাকতাম। এই তৃণমূলে কেউ যদি কেউ ওঠে তাহলে তাঁর পতন অবশ্যম্ভাবী।
মমতা ব্যানার্জী আমাদের কাছে মা। সেই মায়ের সঙ্গে কেউ যদি বিশ্বাসঘাতকতা করেন, আপনারা কেউ ছেড়ে কথা বলবেন না। যে বিশ্বাসঘাতকতা করবে, আগামী দিনে কড়ায় গণ্ডায় তার জবাব দেবে তৃণমূল কংগ্রেস। অভিষেক তাঁর এই কথায় ঘুরিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকেই নিশানা করলেন। আজ এই সভা থেকে তিনি এও বলেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামক সূর্যের সাথে যে লড়াই করবে সেই ঝলসে যাবে!