দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাজ্য রাজনীতি পুজোর আগে থেকেই শুভেন্দু-বিতর্কে সরগরম। অধিকারী পরিবারের কর্তা শিশিরবাবু এই বিষয়ে কোনভাবেই মুখ খুলতে চান নি। বরাবরই ছেলে কি ভাবছে কি করবে সেটা তার ব্যক্তিগত এই বলে কাটিয়ে দিয়েছেন। এমন কি প্রশান্ত কিশোর তাঁর বাড়িতে গিয়ে মধ্যস্থতা করতে চাইলেও সেটা ফলপ্রসূ হয় নি। এবার ছেলে শুভেন্দু অধিকারী যখন পদত্যাগ করেছেন ঠিক সেই সময়ে বাবা শিশির মুখ খুললেন। জানালেন, “আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব। বয়স অনেক হল। অনেক কিছু দেখলাম, শিখলাম। এই বয়সে অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো মানসিকতা নেই। শুভেন্দু মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছে। ক্ষোভ, অভিমান আছে। তবে দলেরই কয়েকজন জোর করে ঠেলে বিজেপিতে পাঠিয়ে দিতে চায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু সম্পর্কে যা বলছেন, তা ঠিক করছেন না।” আর শিশির বাবুর এই মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে যে কে বা কারা চাইছে শুভেন্দু বিজেপি তে যাক!
শুভেন্দু বাবু পদত্যাগ করার পর পরই গত শুক্রবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটের বাড়িতে দলীয় বৈঠক সংঘটিত হয়। যেখানে দলনেত্রী জানিয়েছিলেন বলেন, ‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনারা নির্বাচনের কাজ শুরু করে দিন। বিজেপিকে যেভাবেই হোক প্রতিরোধ করতে হবে। বিজেপি সোশ্যাল মিডিয়ায় যা বলবে, তার পালটা নয়, দলের উন্নয়ন নিয়ে প্রচার করতে হবে। জনসংযোগ বাড়িয়ে তুলুন।’ আর সেটাকে পাথেয় করেই চলবেন বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্বরা।
তৃণমূলে থাকার প্রসঙ্গে শিশির অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান,‘দেখুন কী হয়।’ অর্থাত্ শুভেন্দুর মত তিনিও বিষয়টি নিয়ে রহস্য তৈরি করে রাখলেন। শিশির বাবু স্পষ্ট করে না বললেও শুভেন্দু বাবুর দলে থাক নিয়ে সাংসদ সৌগত রায় খুবই আশাবাদী। সৌগত বাবুর মতে, শুভেন্দু বাবুর সঙ্গে আলোচনার দায়িত্ব দলনেত্রী নিজেই দিয়েছিলেন। মুখোমুখি আলোচনাতে শুভেন্দু কিন্তু কখনোই দল ছাড়ার কথা একবারও বলেননি। সৌগত বাবু এখনো বিশ্বাস করেন যে, শুভেন্দু বাবু তৃণমূল দলেই থাকবে।
শিশির বাবু ও সৌগত বাবুর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধী দল অর্থাত্ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার মন্তব্য করেছেন যে, ‘সৌগত রায় বিজেপিতে যোগ দেবেন।’ আর এই যোগদান প্রসঙ্গে সৌগত বাবুর বলেন, তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে বলছেন, তাই অমিত মালব্যর নির্দেশে তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্য ছক কষা হচ্ছে। তবে সৌগত বাবু বলেন মিডিয়া যতদিন তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করবেন, ততদিন তিনি বলে যাবেন। এই মূহুর্তে শুভেন্দু বাবু রাজনৈতিক কোনো মন্তব্য আর করছেন না। এমনকি আজ তমলুকের সভা থেকে একটাও রাজনৈতিক মন্তব্য করেন নি। ফলত: যে শুভেন্দু রহস্য উন্মোচনে বাংলা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সেটা আরও একটু গভীর হয়ে গেল শিশির অধিকারীর মন্তব্যে!