দ্য ক্যালকাটা মিরর: গতকাল ডায়মন্ডহারবারের সাতগাছিয়ার সভাতে চাঁছাছোলা ভাষাতে বিজেপির সব নেতাকে এক হাত নিয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কাল কৈলাশ বিজয়বর্গীয়’র ছেলেকে, দিলীপ ঘোষকে ‘গুণ্ডা’ বলে অবিহিত করেছেন। এমন কি সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেও। বলেছেন ‘ভাইপো’ না বলে সাহস থাকলে তাঁর নাম ধরে অভিযোগ করুন বিজেপি নেতারা। এবার অভিষেকের সেই চ্যালেঞ্জের জবাবে তাঁকে ‘ভাইপো’ না ডেকে ‘খোকাবাবু’ বলে ডেকে কটাক্ষ করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ বাবু কাল একটি বৈঠকে বলেন ওনার প্যারাসুট বা লিফটের দরকার কেনো পরবে ‘উনি কোলে চড়ে এসে সাংসদ হয়েছেন।’
শুধু তাই নয় গতকাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে দিলীপ বাবু আরও বলেন, সবাই ‘ভাইপো বলেছে তো কী হয়েছে? আদর করে লোকে ভাইপো বলছে। দিল্লিতে তো যুবরাজকে পাপ্পু বলা হয়, সেটা বললে ভালো হবে? আমি ভাইপো বলছি না, আমি বলছি খোকাবাবু। কোলে চড়ে উনি রাজনীতিতে এসেছে, এখনও কোলই আছেন। যে লোকেরা ওনার পার্টির জন্য প্রাণ দিল, রক্ত দিল, তাঁরা আজকে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে, হাতজোড় করে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকছে। আর উনি কোলে চড়ে এসে রাজনীতিতে এসে এমপি হয়ে গেলেন। মানুষ সব জানেন।’
উল্লেখ্য, রবিবার সাতগাছিয়ার মঞ্চ থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপকে মাফিয়া, গুন্ডা বলে কটাক্ষ করেছিলেন অভিষেক। সেই উক্তির জবাবে দিলীপ বাবু জানান, ‘বাংলার মানুষের জন্য গুন্ডামি করতে হলে আমি গুন্ডা। এখনও কিছুই দেখেননি, আরও গুন্ডামি দেখবেন।’
তবে অন্যদিকে আবার সুর চড়িয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ দিলীপের ‘খোকাবাবু’ কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন। বিজেপি রাজ্য সভাপতিকে কুণাল বাবুর বক্তব্য, ‘কোলে চড়ে এসে বিধায়ক হয়েছে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়ের ছেলেরা। এরকম নামের লিস্ট আরও দিতে পারি। উনি ‘খোকাবাবু’ বলছেন বলুন, মে মাসে খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তণ দেখবেন। কৈলাস বিজয়বর্গীয় বার বার ভাইপো বলছিলেন, চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল অভিযোগ করলে নামটা বলুন। তাহলে মানহানির মামলা করে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো যাবে। বার বার এক একটা নাম দিয়ে কী বলা হল, তাতে কিছু আসে যায় না। খোকাবাবু তো আপনার পার্টিতে আছেন। যিনি বান্ধবীর আঁচল ছাড়া কথা বলতে পারেন না। তাঁর ফ্ল্যাটেই আপনার নেতারা যাচ্ছেন। আপনি সেখানে মধ্যাহ্নভোজ খেতে ছুটছেন।”


খুব স্বাভাবিকভাবেই গতকাল রাজ্য রাজনীতির জন্যে দিনটি ভিশন গুরুত্বপূর্ণ ছিল। একদিকে তমলুক শুভেন্দু বাবুর সভা, হলদিয়াতে রাজ্যের তিন মন্ত্রী’র সভা আর ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। অন্যদিকে দিলীপকে কটাক্ষ করে কুণাল ঘোষ আরও বলেন নে, “যাঁদেরকে ওনারা নিজেদের অফিসে বসে নারদায় অভিযুক্ত বলেছিলেন, তাঁদেরকেই এখন ওনাদের মাথায় বসাতে হচ্ছে। আর পুরোন নেতারা প্লাস্টিকের চেয়ার কিনে ফুটপাথে বসে থাকছেন।” এক কথায় কথার যুদ্ধে যে একুশের নতুন লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে বঙ্গ-রণাঙ্গনে সে কথা বলাই বাহুল্য।