দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত দু একদিন আগে মদন মিত্র সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখেন ‘প্যাক আপ’ ! আর তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ওঠে। কারণ তৃণমূলের প্রথম দিন থেকে যে কজন কাণ্ডারী হাল বেয়ে চলেছিলেন, তাদের মধ্যে মদন মিত্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁর ‘প্যাক আপ’ মন্তব্য যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডিং দেখেই আঁচ করেছিলেন। আর অবশেষে তা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূল নেতা মদন মিত্র। গতকাল অর্থাত্ সোমবার একাধিক সংবাদমাধ্যকে সাক্ষাৎকারে এ ব্যাপারে তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার চেষ্টাও করেন। আর খুব স্বাভাবিকভাবেই মদনের মুখে এদিন বারবার শোনা গেলো শুভেন্দু অধিকারী ও প্রশান্ত কিশোরের নামও। আর ভাববাচ্যে অভিষেক এর নামও!


মদন মিত্র জানান, তাঁর প্যাক আপ এর মানে এবার সামগ্রিক প্যাক আপ। বাংলার মানুষের জন্য প্যাক আপ। প্যাক আপ করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে”। সেই সাথে শুভেন্দু প্রসঙ্গে আসতে তিনি বলেন ‘শুভেন্দু আমার খুব প্রিয় সহকর্মী। দীর্ঘদিন ধরে সুসম্পর্ক। পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা প্যাক আপ দরকার যেটা মানুষ চাইছে’।
তবে শুভেন্দু’র মতই তিনিও ঠারে ঠোরে জানিয়ে দেন যে তাঁর আশ্রয় কখনোই বিজেপি হবে না, তবে বিজেপি কে নিয়ে ভাবছেন না যে সেটাও পরিষ্কার করে বলেন নি। তবে প্রচ্ছন্ন ইশারায় তিনি এটাও জানিয়েছেন যে যদি বাংলার বুকে পদ্মফুল ফোটে তাহলে বিজেপির বোঝা উচিত ‘বাংলার বুকে বাংলার সংস্কৃতি, এই জায়গাটায় যেন আপোস করতে না হয়’।
তবে এদিনের সাক্ষাতকার গুলিতে তিনিও যে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কাজে অসন্তুষ্ট এদিন সেটাও স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন মদনবাবু। তাঁর মতে ‘প্রশান্ত কিশোর আমাদের পরিসংখ্যানবিদ। তিনি আমাদের কিছু কম্পিউটার দিয়েছেন। তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছেন। তবে কখন প্যাক আপ হবে তিনি বলছেন কেন? আমার মনে হয় রাজনৈতিক প্যাক অপের সময় হয়েছে’।
মদনবাবু আরও বলেন, ‘অনেক নাটক অনেক যাত্রা হয়ে গেছে। এবার ফাইনাল প্যাক আপ। আমাদের প্যাক আপ মানে তৃণমূল ছাড়া এখানে যাওয়া ওখানে যাওয়া নয়। আমাদের প্যাক আপ মানে যা নির্মম সত্যি, মানুষ যা চায় সেই প্যাক আপ। অভিনয় শেষে প্যাকআপ হয়, অভিনেতার মেকআপ তোলেন। রাজনীতিতে তো মেকআপ তোলা যায় না তাই এখন তৃণমূলে প্যাকআপ করার পালা চলছে’।
অন্যদিকে দলের বিক্ষুব্ধ ও অভিমানী নেতা শুভেন্দুকে তিনি সন্ধির বার্তা দিলেন। জানালেন, ‘আমি আর শুভেন্দু একই নৌকায় রয়েছি। আমাদের দেখতে হবে সেই নৌকায় যেন ফুটো না হয়’। তবে দলের দু:সময়ে তাঁর কাঁধে বন্দুক রেখেই পার হয়েছে তৃণমূল। তাঁকে জেলেও যেতে হয়েছে তাই অভিমানী মদন মিত্রর সতর্কবার্তা, ‘জীবন মরন সাঁকোর সামনে দল এখন দাঁড়িয়ে। বাংলা এখন দাঁড়িয়ে। এখন তোমায় বুঝতে হবে কী হবে আর কী হবে না। কোন সাঁকোটা পারাপারের কোন সাঁকোটা পার হবে না’।
তবে এদিন দলের কিছু সুবিধাবাদী মানুষদের নাম না করেই তিনি কটাক্ষ করে বলেন ‘অনেকে বেশি পেয়ে গেছে, আমাদের বাড়িতে ক্যাপ্সুল লিফটও নেই। আমাদের কথায় কথায় হেলিকপ্টারে চড়াও কপালে নেই। আমিও সম্পদ, আমিও তৃণমূলে আছি। যারা তৃণমূলে নেই, তৃণমূলের পতাকা ছাড়া কর্মসূচি করছে তারাও তৃণমূলে আছে। ব্যাপারটা গোলমাল হয়ে যাচ্ছে’। এই ক্যাপসুল লিফট, হেলিকপ্টার এই প্রসঙ্গে যে তিনি অভিষেক ও কল্যাণ কেই থুকলেন সে কথা বলাই বাহুল্য। তাহলে কী ক্যান্সার অনেকটাই ছড়িয়ে গিয়েছে!