দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: একটা Whatsapp মেসেজ আর একরাশ হতাশা এই হল আজকের দুপুরের রাজ্য রাজনীতির তাজা খবর! গতকাল ম্যারাথন বৈঠকের পর ‘সৌগত রায়’ খুব আশাবাদী ছিলেন যে বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে কিন্তু ‘রাত খতম তো বাত খতম’ এটাই শেষমেষ ঘটলো। আর কিছুটা অবাক করেই আজ নন্দীগ্রামের বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ করে জানিয়ে দিলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল।’ সেই সাথে তিনি (শুভেন্দু) এও জানলেন যে বৈঠকের পর দলের তরফে একতরফাভাবে যে বিবৃতি মিডিয়াকে দেওয়া হয়েছে তাতেও তিনি যারপরনাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর ফলে হলদিয়াতে তৃণমূল সমর্থকদের যে আনন্দ উত্সব করতে দেখা গিয়েছিলো তা এক লহমাতে ‘ফু এ নেভা প্রদীপ’ হয়ে গেল। যার পোড়া সলতের গন্ধ সৌগত রায়ের হতাশ মুখ ও আজ দুপুরের মন্তব্যে প্রকাশ্যে ধরা পড়েছে।
উল্লেখ্য গতকাল অর্থাত্ মঙ্গলবার শুভেন্দু-অভিষেক- পিকে বৈঠকের পর সৌগত রায় মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন, ‘সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাকিটাও ধীরে ধীরে মিটে যাবে। শুভেন্দু তৃণমূলেই থাকবেন। বিধানসভা নির্বাচনে একসঙ্গে লড়বেন।’ যদিও সকলেই অপেক্ষায় ছিলেন যে শুভেন্দুর তরফে বৈঠক নিয়ে কোনও বয়ান আসে কিনা। কারণ কাল বৈঠক শেষে রাত দেড়টা নাগাদ শান্তি কুঞ্জে পৌঁছলেও শুভেন্দু বাবু আজ দুপুর পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন।
এরপর আজ বুধবার দুপুরে হটাত্ই সুত্র মারফত খবর আসে যে বেলা ১১টা নাগাদ সৌগত রায়কে তিনি মেসেজ করেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বক্তব্যের এখনো সমাধান হয়নি। সমাধান না করেই আমার ওপর সব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৬ ডিসেম্বর আমার সাংবাদিক বৈঠকে সব বলার কথা ছিল। তার আগেই সংবাদমাধ্যমের কাছে সব বলে দেওয়া হল। আপনাদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা মুশকিল। আমাকে মাফ করবেন।’
এই প্রসঙ্গে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠদের মত, মঙ্গলবারের বৈঠকে দুপক্ষ শুধুমাত্র তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছে মাত্র। কারও দাবি দাওয়া নিয়ে সেভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। অর্থাৎ সৌগত রায় মিডিয়াতে এই যে ‘মিটে গিয়েছে’ বলে দাবি করেছেন তাতেই বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শুভেন্দু। এর পাশাপাশি তিনি যে তৃণমূলেই থাকবেন বলে দলের তরফে আগাম প্রচার করা হচ্ছে সেই বিষয়ে তিনি অসন্তুষ্ট।
এদিকে বুধবার কাঁথিতে সকাল থেকে অনুগামীদের ভিড় জমতে থাকে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে জমতে থাকে। রহস্য আরও ঘন হয় যখন দেখা যায় যে এদিন তাঁর বেশ কয়েকটি কর্মসূচি থাকলেও শুভেন্দু বাড়ি থেকে বেরোননি। যদিও শুভেন্দুর অনুগামীদের বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, শুভেন্দু নিজে মুখে কিছু বলার আগে যেন অনুগামীরা কোনও বিরূপ পদক্ষেপ না করেন। এক কথায় তৃণমূলের এখন ‘অশ্বত্থামা হত ইতি গজ’ অবস্থা। তবে শুভেন্দু বাবু যে আর তৃণমূলে ফিরছেন না সেটা কিছুটা স্পষ্টই হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে শুভেন্দু বাবুর এই কনফিউজিং অবস্থান দেখে বিজপি কিছুটা ব্যাকফুটে। অনেকটা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন বিজেপি কারোর জন্যে অপেক্ষা করে না। যাঁর আসার তিনি একেই আসবেন। দরজা খোলা রয়েছে। আবার আজ সন্ধ্যেতে বিক্ষুব্ধ বিধায়ক শীলভদ্র ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘বন্ধু দেখা হবে’। তবে যে টেমপ্লেট তিনি ব্যবহার করেছেন সেটা গেরুয়া রঙের আর এ নিয়ে শীতের হালকা আমেজে চড়া উত্তেজনা এখন বঙ্গ রাজনীতিতে।