দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: তৃণমূলের প্রথমসারির সাংসদ, ইংরেজি ভাষার বাগ্মিতায় বর্ষীয়ান সাংসদদের মাঠ ঘুরিয়ে দেন ঠিক ই, তবে এবার একটু ‘ভুল’ করে ফেলেছেন মহুয়া মৈত্র। সংসদে তাঁর ভাষণ ভাইরাল হয়ে হয়ে এমন ট্রেণ্ড তৈরি হয়েছে, তাই বোধহয় সেই ট্রেন্ড তৈরির নায়কদের এবার তিনি সঠিক মূল্যতে মূল্যায়িত করলেন! খবর কভার করতে যাওয়া সাংবাদিক কে ‘দু’ পয়সার প্রেস’, এভাবেই সম্বোধন করেন তিনি।
যাঁর বক্তৃতা বিতর্ক তৈরি করে তাঁর মন্তব্য বিতর্ক তৈরি করবে এটাই স্বাভাবিক। আর হয়েছেও তা। তবে এর আগে তিনি ভোতা ছুরির ওপরে মাখন কেটেছেন কিন্তু এবার ভুল করে বেয়নেটে দিয়ে ফেললেন হাত। আর যার জেরে সোমবার নিজের সেই বক্তব্যের জন্য ক্ষমাও চাইলেন সাংসদ! তবে মচকালেন কিন্তু ভাঙলেন না!
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার, অর্থাত্ গতকাল গয়েশপুরে। সেখানে একটি কর্মীসভায় গিয়েছিলেন মহুয়া। কর্মী সভাতে তিনি উপস্থিত কর্মীদের জানিয়েছিলেন যে তাঁর এই কর্মীসভা যেনো মোবাইল রেকর্ডিং না হয়। এমন সময়ে আচমকাই তাঁর নজরে আসে যে এক সাংবাদিক সেখানে রয়েছে যিনি সেই খবরটা কভার করছিলেন। ব্যাস, এতেই মারাত্মক ক্ষিপ্ত হয়ে বলে ওঠেন, “কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে? কর্মী বৈঠক হচ্ছে। আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত। আমি নির্দেশ দিচ্ছি, প্রেসকে সরান”।
তবে এই গলাধাক্কা দিয়ে অপমান করে প্রেস তাড়ানোর ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগে নি। সাংবাদিকরা প্রতিবাদমুখর হন। প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,‘কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সাংবাদিকদের সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন তাতে প্রেস ক্লাব, কলকাতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং তীব্র প্রতিবাদ করছে। তাঁর এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে অনভিপ্রেত, অপমানজনক। ধিক্কার জানাই সাংসদের মন্তব্যে’।
কিন্তু প্রেসক্লাবের এই বিবৃতির পরও নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি মহুয়া। তিনি টুইটার পোস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপ মাইস্টোরি তে লিখেছেন, “আই অ্যাপোলোজাইজ ফর দ্য মিন হার্টফুল অ্যাকিউরেট থিংস আই সেড। ” যার মর্মার্থ, তাঁর কথাগুলি হয়ত মানুষকে আহত করছে সেটি স্বীকার করছেন কিন্তু ক্ষমা চাইলেও তিনি যা বলেছেন, সেটা সঠিক। এমনটাই দাবি মহুয়ার। অনেক সাংবাদিক যেভাবে ‘দুই পয়সার’ আসসোল ছবি প্রতিবাদ স্বরুপ শেয়ার করছিল, সেই ট্রেন্ডটি ফলো করেই নিজের টুইটটি করেন মহুয়া। আবারও বলেন যে তিনি ‘মিম এডিট’ করতে পারদর্শী হয়ে গিয়েছেন।
এই বিষয়ে অন্যান্য তৃণমূলের সাংসদের সাফাই যে তিনি ওই দলীয় কর্মীসভাতে কর্মীদের ওপর রেগে গিয়েছিলেন। কারণ মানা করা স্বত্বেও কর্মীসভায় সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছিল। তাই রাগের মাথায় তাঁদের উদ্দেশ্যে ওই মন্তব্য করেন তিনি। তবে সাংবাদিকদের নিশানা করাই যে ওনার লক্ষ্য ছিল তা নয়। তবে যতই ড্যামেজ কণ্ট্রোলে নামুক সাংসদ’রা। মহুয়া মৈত্র যে মানসিকভাবে সুস্থ নন সেটা তাঁর বিগত দিনের কিছু কার্যকলাপে প্রমাণ রয়েছে এমনটাই মনে করছে সাংবাদিকদের একাংশ। সকলের একটাই মত্, মহুয়া মৈত্রর এই ব্যবহার সত্যিই অনভিপ্রেত।