দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত কাল বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় রাজ্যপালের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে রাজ্য প্রশাসনের কাছে নির্দেশ আসে। তাতে বলা হয় সোমবার দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ডেকে পাঠিয়েছে মুখ্য সচিব এবং ডিজিকে। সে ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তড়িঘড়ি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান যে সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘ল এণ্ড অর্ডার’ এর বিষয় রাজ্যের, এখানে কেন্দ্রের ‘কৈফিয়ত’ চাওয়ার কোনও একতিয়ার নেই।
ফলে দুপুরের পরেই কেন্দ্রের সেই নির্দেশকে অমান্য করে পাল্টা রাজ্য প্রশাসন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছে যে, সোমবার মুখ্যসচিব এবং ডিজি’র দিল্লি যাওয়ার কোন কারণ নেই। এই চিঠি স্বয়ং মুখ্যসচিব পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন যে রাজ্য পুরোপুরিভাবে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করছে রাজ্যপুলিশ ও প্রশাসন। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে আর একবার ফের কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সংঘাত চরমে পৌঁছল।
আরও পড়ুন: মুখে পড়তে হচ্ছে না মাস্ক, চলছে স্কুল কলেজ – বিদেশ নয় দেশের এই জায়গাই করোনাহীন
আজ মুখ্যসচিবের চিঠিতে লেখা হয়েছে- “বিজেপি সভাপতিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও যে ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে রাজ্যকে নিজের মতো করে তদন্ত করতে দেওয়া হোক। এই ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টির তদন্ত করা হচ্ছে। বিজেপি সভাপতির নিরাপত্তায় রাজ্য সরকার সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছে।” সেখানে ডিআইজি নিজেই ছিলেন। চিঠিতে এমন কথাই লিখেছেন মুখ্য সচিব।
এ খবর প্রকাশ হতেই রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিজেপি নেতাদের মতে প্রশাসনের বিবৃতি রাজনৈতিক। তাঁরা না গেলে একটা সাংবিধানিক সংকট দেখা দেবে। আমি সংবিধান বিশেষজ্ঞ নই। পরবর্তীতে পরিস্থিতি কী হবে তা নিশ্চয়ই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা দেখবেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন এমন কোনো আইন নেই যার ভিত্তিতে এভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ডেকে পাঠাতে পারে মুখ্য সচিব এবং ডিজিকে।
আর এ ব্যাপারে তৃণমূলের যুক্তি, গুজরাটে প্রচার করতে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানে তাঁর গাড়িতে হামলা করা হয়েছিল। সেটা নিয়ে তো কেউ কিছু মন্তব্য করছেন না? যেভাবে কেন্দ্র মুখ্য সচিব এবং ডিজিকে ডেকে পাঠিয়েছে, সেটা ক্ষমতার আস্ফালন ছাড়া আর কিছুই নয়।