দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত বৃহস্পতিবার শিরাকোলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলা হয়। আর এই ঘটনার পর রাজ্য-কেন্দ্র চিঠি চালাচালি, ক্ষমতার ব্যবহার অপব্যবহার নিয়ে অনেক জলঘোলা শুরু। এমন কী সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় অজয় ভাল্লাকে চিঠিও পাঠিয়েছেন ‘হুশিয়ারি’ দিয়ে যে অজয় জি কে নিজের পদে বিবেচনা কপরে কাজ করার। সেই সাথে কল্যাণের এও দাবি যে “পুলিশ’ এবং ‘জনশৃঙ্খলা’ ভারতের সংবিধানের সপ্তম তফসিলের অধীনে রাজ্যের বিষয় এবং তাই অপরাধ প্রতিরোধ, সনাক্ত, নিবন্ধন এবং তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচার করা রাজ্য সরকারের প্রাথমিক কর্তব্য।” কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই মুখ্য সচিব ও ডিজি কে তলব আদৌ কী ক্ষমতার দম্ভ প্রদর্শন ভিন্ন কিছু নয়!
অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের তিন আইপিএস অফিসারকে কেন্দ্রের ডেপুটেশনে কাজ করার জন্য তলব করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ওই তিন অফিসার হলেন – ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে, দক্ষিণবঙ্গের এডিজি রাজীব মিশ্র এবং প্রেসিজেন্সি রেঞ্জের ডিআইজি প্রবীণ ত্রিপাঠী। ডায়মন্ড হারবারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে হলেন ২০১১ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। যিনি ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত ‘আস্থাভাজন’ বলে দাবি বিরোধীদের। প্রবীণ ত্রিপাঠী হলেন ২০০৪ ব্যাচের আইপিএস অফিসার। আর ১৯৯৬ ব্যাচের আইপিএস অফিসার হলেন দক্ষিণবঙ্গের এডিজি প্রবীণ ত্রিপাঠী।
১৯৫৪ সালের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (ক্যাডার) রুলস অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে কোনওরকম মতভেদের ক্ষেত্রে ‘কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে।’
কিন্তু এই তলবের চিঠি হাতে পাওয়া মাত্র নবান্ন জানিয়েছে রাজ্যের হাতে বেশি আইপিএস অফিসার নেই। সেজন্য তিন অফিসারকে কেন্দ্রের ডেপুটেশনে পাঠানো যাবে না বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছে নবান্ন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রের সেই নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য রাজ্য। অর্থাৎ ওই তিন অফিসারকে ছাড়তেই হবে। ১৯৫৪ সালের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (ক্যাডার) রুলস অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে কোনওরকম মতভেদের ক্ষেত্রে ‘কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে।’
আরও পড়ুন: SPECIAL FEATURE প্রণম্য দিদিকে কেন শুভেন্দুর শুকনো “নমস্কার ?” – দেবারুণ রায়
ওই নিয়মে বলা হয়েছে, ‘কোনওরকম মতভেদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে সেই বিষয়টি নির্ধারণ করতে হবে অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে মেনে চলতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে।’ এমনকি ডেপুটেশনের নিয়ম অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রের সম্মতি নিয়ে কোনও অফিসারকে কেন্দ্রীয় সরকার বা অন্য রাজ্য সরকারে ডেপুটেশনে কাজ করতে পারেন। একইভাবে কেন্দ্র বা অন্য রাজ্যের দ্বারা পুরোপুরি বা আংশিক নিয়ন্ত্রিত কোনও সংস্থা, সমিতি বা ব্যক্তিগতদের সংস্থায় ডেপুটেশনে কাজ করতে পরেন অফিসাররা। আর ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস) অফিসাররা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনেই থাকেন। সুতরাং কল্যাণবাবু যে দাবি করছেন সেটা হিমশৈলের শুধুমাত্র মাথা। আর এক্ষেত্রে পুলিশ মন্ত্রী ছাড়া কিভাবে একজন দলীয় সাংসদ এই চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কে লিখতে পারেন! তা নিয়েও বিরোধী ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা গিয়েছে। এক কথায় পুলিশ নিয়ে কেউ কেউ ফুলিশ মন্তব্য করছেন আবার কেউ কেউ বলছেন এই বিষয়ে ‘পুলিশ মন্ত্রী’ নিজেই কেন মৌন!