দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শুভেন্দু অধিকারী যে দল ছাড়বেন, তা আগেই নির্ধারিত ছিল, যে কারণে তৃণমূল নেতৃত্ব’র সে বিষয়ে বিশেষ দু:খ নেই। তিনি সে বিষয়ে উত্তরবঙ্গের সভা থেকে বলেইছেন যে পোশাক পাল্টানো যায় কিন্তু আদর্শ পাল্টানো যায় না। কিন্তু শুভেন্দুর সাথে সাথে আরও দুই নেতা তৃণমূল ত্যাগ করায়, শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর আজকের আলোচনাতে যে প্রথমেই প্রধান্য পাবে দলের বিদ্রোহী বিধায়কদের বিষয় সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। সেই সাথে আজ অমিত শাহ’র বাংলায় আসার বিষয়ও প্রাধান্য পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলে দলের এই হটাত্ ভাঙন ঠেকানোর পন্থা নির্ধারণ করতে কালীঘাটের বাড়িতে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নয়থকে উপস্থিত থাকবেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরও। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের সহ একাধিক শীর্ষ নেতা।
উল্লেখ্য গত পরশু শুভেন্দু অধিকারী সুনীল মন্ডলের বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। আর সেই বৈঠক শেষে ঘনিষ্ঠ মহলে শুভেন্দু ইঙ্গিত দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে আরও ১০ বিধায়ক এই শনিবার বিজেপি তে যোগদান করবেন। ওই দিন অর্থাত্ বৃহস্পতিবার শুভেন্দু ছাড়াও দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন আসানসোলের বিদায়ী মেয়র, পুর প্রশাসক তথা পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী, বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ২০২১ শে ক্ষমতায় এলে গুরুং কে সহায়তা? গোর্খাল্যান্ড না অখণ্ড বাংলা! নাকি সাপ মারলেন লাঠিও ভাঙলো না!
জিতেন্দ্র তিওয়ারি বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করার পরেই উত্তরবঙ্গ থেকে ফোনে নিজেই কথা বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাথা ঠান্ডা রেখে ১৮ ডিসেম্বর আজ মুখ্যমন্ত্রী’র সাথে বলার জন্যে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু, মমতার সেই আর্জি উপেক্ষা করেই জিতেন্দ্র সমস্ত পদ-সহ তৃণমূল ছেড়ে দেন বৃহস্পতিবারই।
শুধু আসানসোল নয় তৃণমূলের হাতছাড়া হতে চলেছে বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীলকুমার মণ্ডল। শুভেন্দুর সাথে বৈঠক অপনর বাড়িতেই হয়েছে, ফলে তিনও বিজেপি-তে যোগ দেবেন সেটা নিয়ে খুব বেশি সন্দেহ আর নেই। এছাড়াও আরও কয়েক জন বিধায়কের গতিবিধি সন্দেহজনক লাগছে। তবে শুধু বিধায়ক, সাংসদরাই নন, শাসক দলের উদ্বেগ বাড়িয়ে নিচুতলার অনেক নেতার গলাতেও নিত্য নতুন ক্ষোভের সুর। আর উপেক্ষা, বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে পর্যালোচনা করতেই এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে শাসকদলের বিশেষজ্ঞরা।
যদি মমতা ব্যানার্জী এই ভাঙ্গন কে পাত্তা দিতে চাইছেন না। তিনি বলেওছেন “যাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার বেরিয়ে যাক।” আর ‘দিদি’র সে সুরে সুর মিলিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতারাও বলছেন তৃণমূল সাগরের মত দল। দু একজন বেরিয়ে গেলে কিছুই হবে না। তবে বিধানসভা ভোটের মুখে দলের মধ্যে ক্ষোভ প্রশমন করে, কী ভাবে ভাঙন রোধ করা যায়, সেই রণকৌশল স্থির করতেই শুক্রবারের এই বৈঠক এমনটাই বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা।