দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ বহুদিন ধরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রছাত্রীর বন্টন ব্যবস্থা নিয়ে বাগবিতন্ডা চলছিল। অবশেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বি.টেক কোর্সে ডোমিসাইল নীতি চালু করল। এই ডোমিসাইল নীতি চালু করাতে ‘বাংলাপক্ষ’-এর দীর্ঘদিনের লড়াই আবার উঠে এলো শিরোনামে। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোমিসাইল নীতি চালু করার ‘বাংলাপক্ষ’ ব্যাপকহারে প্রচার ও আন্দোলন করেছিল। তার ফলে ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডোমিসাইল পদ্ধতি চালু হয়। এবার সেই একই নীতির প্রয়োগ শুরু হবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.টেক কোর্সে। উল্লেখ্য ২০ শে এপ্রিল ২০২০, বাংলাপক্ষ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই মর্মে ডেপুটেশন দিয়েছিলো।




২০১৫ সাল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছরের বি.টেক কোর্স চালু হয়। রাজ্যের বাকি সরকারি-বেসরকারি কলেজের মতোই এখানেও জেইই নির্ধারিত কাউন্সেলিং-এর দ্বারাই ছাত্রছাত্রী ভর্তি হত। এইবার সেই নীতি প্রয়োগের পরে বাকি ৮৯টি সিটে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারভে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিজ্ঞপ্তিতে অনুমোদন সাপেক্ষে সাক্ষর করেছেন ফ্যাকাল্টি কাউন্সিল অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজির সেক্রেটারি অমিত রায়। পশ্চিমবঙ্গের অধিবাসী হিসেবে দুটি প্রমাণপত্র পেশ করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যার মধ্যে প্রথমটি হল – এইরাজ্যে টানা দশ বছর বসবাসের রেসিডেন্স প্রুফ ও দুই হল, ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের রাজ্যবাসী হওয়ার কোনোরকমের প্রমাণপত্র। এইদুটি হলেই ডোমিসাইল নীতি কার্যকরী হবে।
আরো পড়ুনঃজাতীয় সঙ্গীত বিতর্কে এবার ‘বাংলাপক্ষের’ নিশানায় বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী
এই বছরের গোড়া থেকেই রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা রাজ্যের সরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না সেই কারণ দেখিয়ে ডোমিসাইল ব্যবস্থা চালু করার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ডেপুটেশন দেয় বাংলা পক্ষ। সেই ডেপুটেশনের সাড়া মিলল বছরের শেষ হবার আগেই। এই ডোমিসাইল চালু করার ফলে যে অনেক ছাত্রছাত্রী রাজ্যেই পড়ার সুযোগ পাবে এবং তার প্রভাব যে রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে পরবে তা মনে করে বাংলা পক্ষ। বাংলা পক্ষ এই মর্মে তাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও বাংলার মানুষদের অভিনন্দন জানিয়েছে। তাদের ‘রক্তপলাশ’ অভিনন্দন যে এক বিরাট আন্দোলনের সূচনা করল তাও বোঝা গেছে তাদের বক্তব্য থেকে।


‘বাংলা পক্ষ’ জানিয়েছে যে তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হল রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলি, সেখানে এই ভূমিসন্তানদের সংরক্ষণের দাবি নিয়ে তারা প্রচার ও আন্দোলন শুরু করবে। তাদের আন্দোলন যে অদূর ভবিষ্যতে মেডিকেল কলেজগুলিতেও এই নীতি সফলভাবে চালু করতে বাধ্য করবে সেই নিয়ে আশাব্যঞ্জক ‘বাংলা পক্ষ’। বাংলার মানুষদের অধিকারের লড়াইতে এর আগে বহুবার রাস্তায় বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনের সারিতেই দেখা গেছে বাংলা পক্ষকে। এবার শিক্ষাঙ্গনে বাঙালিদের অধিকারের এই লড়াইকে আরো জোরালো করে বাংলা পক্ষ জানিয়ে দিল যে বঞ্চিত বাঙালিদের ‘সেই দিন গিয়াছে’, এখন লড়াই করে অধিকার ছিনিয়ে নেবার সময়।