দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিতে একটুও কার্পণ্য করেন নি তিনি। জানিয়েছেন কাজ করতে দেওয়া হয় না দলে। আজ সকালে ত্যাগ করেছেন দলের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক। তবে বিধায়ক পদ থেকে দেন নি ইস্তফা। সরিয়ে ফেলেছেন অফিস থেকে তৃণমূলের যাবতীয় ফ্লেক্স আর ব্যানার! সেখানে এখন বিবেকানন্দর ফ্লেক্স। অফিসের রঙ গেরুয়া হলেও বিজেপিতে কাল যোগ দেবেন কিনা সে বিষয়ে তিনি কিছু জানান নি। আর এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে দলের নেতাদের ঋণ শোধ করতে শুরু করলেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ শীলভদ্র দত্ত।
উল্লেখ্য, তাঁর দলত্যাগ নিয়ে ববি হাকিম প্রকাশ্যে বলেছিলেন যে দল বাঁচিয়ে তুলেছে তাঁকে, সেই দল ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আর সে বিষয় কে ধরেই শীলভদ্র বাবু এবার তাঁর চিকিৎসার জন্য তৃণমূল নেতাদের থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে শুরু করেছেন তিনি। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই ব্যারাকপুরের পুর প্রশাসক উত্তম দাসকে তিনি ২ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এছাড়াও বৃহস্পতিবার নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিককেও টাকা ফেরনোর চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: ইস্তফার পর রাজ্যপালকে চিঠি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী, কি লিখলেন চিঠিতে যাতে বাম-কংগ্রেস সহমত জানালো!
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে বিপুল টাকা খরচ করে লিভার প্রতিস্থাপন করান ব্যারাকপুরের বিধায়ক। খরচ অতিরিক্ত হওয়াতে সে সময় তাঁর ঘনিষ্ঠ একাধিক তৃণমূল নেতার কাছ থেকে তিনি মোট ১২ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। আর যেহেতু তিনি দলে আর নেই তাই সেই ঋণই শোধ করতে শুরু করেছেন, যাতে কেউ বলতে না পারে ভোগ করে পালিয়ে গিয়েছেন।
কিন্তু এই টাকা ফেরানো নিয়ে অনেকেই ববি হাকিমের কটাক্ষকেই দায়ী করছেন। তবে কিছুদিন আগেই শীলভদ্র দত্ত জানিয়েছিলেন যে আগামী বিধানসভা ভোটে আর তৃণমূলের টিকিটে তিনি দাঁড়াবেন না। সেই সাথে তাঁর মুখে শুভেন্দু অধিকারীর গুণগানও শোনা গিয়েছিল। আর তিনি সরাসরি আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরকে। ‘দমবন্ধ হয়ে আসছে’ বলে ফেসবুকে লিখেছিলেন শীলভদ্র। ভবিষ্যতে যাতে কেউ তাঁকে এভাবে কটাক্ষ করতে না পারেন তাই ধারের টাকা শোধ করতে শুরু করেছেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে শীলভদ্র দত্ত জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে শীলভদ্র দত্ত এদিন বলেন, ‘আমার যখন শরীর খারাপ হয়েছিল তখন অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। দলগতভাবে আমাকে কেউ সাহায্য করেছে বলে আমার মনে হয় না। একজন বিধায়ক হিসেবে আমি সরকারি টাকা পেয়েছি। কিন্তু যাঁরা যাঁরা রাজনীতিগতভাবে টাকা দিয়েছেন বলে মনে করছেন, আমি তাঁদের টাকা নিশ্চিতভাবে ফিরিয়ে দেব। যে যে চাইবেন সকলকে দেব।” যদিও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এই তালিকায় রয়েছেন এবং সংবাদ মাধ্যমের সামনে তিনি শীলভদ্র বাবুকে বেইমান বলতেও ভুল করেন নি। আর সেই তকমা মুছে দিতেই তাঁর এই প্রয়াস। এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।