দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির সাথে নতুন রাজনৈতিক জীবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের অমিত শাহের জনসভার মঞ্চ থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েই শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন। শুভেন্দু, শীলভদ্র দত্তের পাশাপাশি বহু নেতারাই শনিবার যোগদান করেন বিজেপিতে। আর আজ মঞ্চে ওঠার ঠিক আগে তৃণমূলকর্মীদের উদ্দেশে ছ’পাতার একটি খোলা চিঠি পেশ করেছেন শুভেন্দু। যে চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন কেন তাঁর এই তৃণমূল ত্যাগ! আর এই চিঠি নিয়েই বেশ অস্বস্তিতে শাসক দল!
আজ শুভেন্দু’র এই দীর্ঘ এই চিঠির মূল কথা “তৃণমূলে পচন ধরেছে। ১০ বছরে কোনও পরিবর্তন হয়নি। দলের থেকে ব্যক্তিস্বার্থ প্রাধান্য পাচ্ছে। এটা ভীষণ কষ্টদায়ক যে, বাইরে থেকে যাঁদের ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছে, তাঁরাই দল চালাচ্ছেন। তৃণমূল স্তরের রাজনীতি সম্পর্কে যাঁদের কোনও ধারণা নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যরা অপমানিত হচ্ছেন।”
এই চিঠিতে তিনি আজ তৃণমূল কর্মীদের উদ্দেশে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শুভেন্দুবাবু আশাপ্রকাশ করেছেন যে এবার নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপে সুষ্ঠু ও অবাধ ভাবে রাজ্যের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এই প্রসঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় বলেন, ‘শুভেন্দু আসায় দলের শক্তি বাড়ল। মমতা যতই চেঁচান তৃণমূল ১০০ আসন ও পাবে না।’
শুভেন্দু একা গেলেন না বিজেপিতে। সঙ্গে নিয়ে গেলেন দলের একাধিক বিধায়ক, সাংসদ এবং জেলাস্তরের অনেক পদাধিকারীদের। এদিন গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন মন্তেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক সৈকত পাঁজা, ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, গাজোলের তৃণমূল বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস, হলদিয়ার সিপিআইএম বিধায়ক তাপসী মণ্ডল, কাঁথি উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, তমলুকের সিপিআইএণ বিধায়ক অশোক দিন্দা, কালনার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু, নাগরাকাটার তৃণমূল বিধায়ক সুকরা মুণ্ডা, পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল, প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দশরথ তিরকে প্রমুখ।
তৃণমূল ছাড়তেই শুভেন্দু অধিকারীর জন্য ক্যাটেগরির নিরাপত্তা ঘোষণা করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বুলেটপ্রুফ গাড়ি পেয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দু আজ আরও লিখেছেন, “২০২১ সালের নির্বাচনের পশ্চিমবঙ্গ এক সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে। একুশের নির্বাচনে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব তার প্রভাব আমাদের ওপরে পড়বে। আমার মনে হয়, এবার নতুন কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নতুন রাস্তা ঠিক করে নিতে হবে। কয়েক দিন আগেই পঞ্চাশে পা দিয়েছি। অনেকে বলছেন, আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হচ্ছে। দশ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। রাজ্যে আমার ভাইবোনদের সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। বলা ভালো অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কিন্তু সরকারি পরিকাঠামো শুধরে নিয়ে রাজ্যের সমস্যার সমাধান করা যেত। কিন্তু তা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যে দলটার জন্য কাঁধে কাঁধ দিয়ে লড়াই করেছিলাম তা ভেতরে ভেতরে পচন ধরছে।”