দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ কাজের সূচনা হয়েছিল অনেক আগেই৷ উত্তর ২৪ পরগণার অশোকনগরের ২২ নং ওয়ার্ডের বাইগাছি এলাকায় আজ আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হল ওএনজিসির অষ্টম তেল ও গ্যাস উত্তোলন প্রকল্প। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থির ছিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। এই প্রকল্প যে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে এক ঐতিহাসিক কাজ হয়ে থাকবে তা জানালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।


প্রধানমন্ত্রী মোদীজির আত্মনির্ভর ভারত গড়ার প্রথম সোপান হিসেবে উল্লেখিত থাকবে এই দিনটি তাও বললেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী। ‘সোনার বাংলা’, ‘জয় বাংলা’ জয়ধ্বনি দিয়ে এও জানালেন যে তৃণমূল শাসনের অবসান করে মোদীজির স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে বিজেপি। এদিকে অশোকনগরের এই প্রকল্প থেকে যে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যান উত্তোলন হবে তা হলদিয়ায় সংশোধন হবে। এই দুটি জায়গাকে সংযুক্ত করবার জন্য সড়কব্যবস্থার দিকেও যে কেন্দ্র নজর রাখছে তাও জানিয়েছেন তিনি। এই উৎপাদন প্রক্রিয়ার ফলে যে জেলা ও রাজ্যে কর্মসংস্থান বাড়বে সে নিয়েও নিঃসন্দেহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।


আরো পড়ুনঃ শীতলতম দিনে কাঁপছে কলকাতা, সূর্য ডুবলেই নাকি ১০-এর নিচে নেমে যেতে পারে তাপমাত্রা!
নভেম্বর মাসেই কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী উত্তর ২৪ পরগনার এই অশোকনগরে ওএনজিসি-র প্রকল্পে বাণিজ্যিক ভাবে তেল উত্তোলনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। দুই বছর আগে ওএনজিসি অশোকনগরে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাণ্ডার খুঁজে পায়। ২০১৮ সালে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, অশোকনগরের একটি কুয়ো থেকে প্রতিদিন ১ লাখ কিউবিক মিটার গ্যাস নির্গত হচ্ছে। তবে তা ব্যবহারের যোগ্য কিনা তা জানতে ওই উত্তোলিত তেল হলদিয়া শোধনাগারে পাঠিয়ে গুণমান খতিয়েও দেখা হয়।
এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা লগ্নি করেছে ওএনজিসি। ভবিষ্যতে আরও লগ্নি হবে বলেও এদিন জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। এরআগেও পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় গ্যাস পাওয়া গেলেও দেখা যায়, তা ব্যবহারের অযোগ্য ছিল। কিন্তু অশোকনগরের বাইগাছি এলাকায় পাওয়া গ্যাস ও তেল ব্যবহারের যোগ্য এই সম্মতির পরেই ঝড়ের গতিতে প্রকল্পটি গড়ে তোলা হয়।
ইতিমধ্যেই হাবড়া-নৈহাটি সড়ক থেকে প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত নতুন রাস্তা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। ওএনজিসি-র প্রকল্পে ঢোকার মুখেই বসানো হয়েছে লোহার গেট। জানা গেছে, পরীক্ষামূলক ভাবে চার একর জমিতে কাজ চলার পর এখন আরও সাড়ে দশ একর জমি প্রয়োজন। ওই জমি চেয়ে ইতিমধ্যেই ওএনজিসি কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। অশোকনগর পুরসভার পক্ষ থেকে ওই জমির জন্য নো অবজেকশন এর কাগজ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রকল্প নিয়েও শুরু হয়েছে জমি বিতর্ক।


ওই প্রকল্পর অধিগৃহীত জমিতে যারা চাষ করতেন তাদের মধ্যে কয়েকজন উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও কর্মসংস্থানের দাবিতে কিছু বিক্ষোভ দেখায়। তবে ভবিষ্যতে উন্নয়নের আশায় খুশি এলাকাবাসীদের বড় অংশ। নতুন আর্থিক বছরে বাণিজ্যিক ভাবে তেলের উৎপাদন শুরু হলে তা শুধু এলাকারই নয়, গোটা রাজ্যের আর্থিক দিক থেকেও উন্নতি হবে বলেই মনে করছে বিশিষ্ট মহল। উল্লেখ্য একই সময় রাজ্যে কর্মসূচি চালাচ্ছেন দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। দুই মন্ত্রীর জোড়া ফলায় যে বিজেপি একুশের ভোটকে নিশানা করেছে তা মেনে নিচ্ছে রাজনৈতিক মহল।