সম্প্রতি দল ছেড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী–সহ শাসকদলের একঝাঁক নেতা ও বিধায়ক। এমন সময় এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সেই বৈঠকেই এদিন দেখা মিলল না রাজ্যের ৪ গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রীর। হ্যাঁ, মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গরহাজির ছিলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর পাশাপাশি বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা এবং উত্তরবঙ্গের দুই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও গৌতম দেব।
শুভেন্দু চলে যাওয়ার আগে পড়ে ‘বেসুরো’ গান গেয়ে যাঁরা ব্যস্ত ছিলেন তাদের মধ্যেই দু একজন এই বৈঠকে হাজির না থাকা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব জানিয়েছেন, জল্পনার কোনও প্রশ্ন নেই। আজ যাঁরা বৈঠকে ছিলেন না তাঁরা নিশ্চয়ই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁদের হাজির না থাকার কারণ জানিয়েছেন। তবে এইটুকু বোঝা গিয়েছে পার্থবাবুর কাছে তাদের অনুপস্থিত থাকার সঠিক কারণ জানা নেই।
তবে বাকীদের নিয়ে অতটা চিন্তা না থাকলেও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের গরহাজির থাকা নিয়ে একটা জল্পনা ঊর্ধমুখী। কারণ, এই ডিসেম্বর মাসেই বহুবার একাধিক অরাজনৈতিক সভায় দলের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাজীব। আর তাঁর ‘বেসুরো’ বক্তব্যে ধরা পড়েছে ‘যত মত তত পথ’–এর মতো দ্ব্যার্থাত্মক মন্তব্যও। যদিও রাজীব বাবুর সাথে ইতিমধ্যেই দু’বার বৈঠকে বসেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের ভোটের কৌশল নির্ধারক প্রশান্ত কিশোরও। কিন্তু এরপরও আজকের মন্ত্রিসভার এমন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি একটা প্রশ্ন রেখেই গেল।
অন্যদিকে জানা গিয়েছে, রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বিশেষ শারীরিক অসুস্থতার কারণে মঙ্গলবারের বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। এছাড়া নিজের এলাকাতে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ব্যস্ততার কারণে আসতে পারেন নি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও। তবে পার্থবাবু না বললেও দলীয় সূত্রে কানাঘুষো শোনা গিয়েছে যে আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁরা এ ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। অপরদিকে ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে কলকাতায় আসতে পারেননি মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহাও। তবে এই অনুপস্থিতি নিয়ে তাঁর মন্তব্য, “‘আমি তৃণমূলে আছি, তৃণমূলেই থাকব। মুখ্যমন্ত্রী আগামী ২৯ তারিখ বোলপুরে আসছেন। সেখানে বৈঠক, জনসভা, মিছিল সব রয়েছে। ওসব নিয়ে ব্যস্ত থাকায় জন্যে এদিন বৈঠকে আসতে পারিনি।” এই মূহুর্তে তৃণমূলের যা অবস্থা তাতে কোনও নেতা মন্ত্রী কোনো বৈঠকে উপস্থিত না থাকলেই সকলে সিঁদুরে মেঘ দেখছে!