দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:কাঁথি এখন পরপর দুদিন রাজনৈতিক মন্তব্য ও বিপরীত মন্তব্যে সরগরম। গতকাল, অর্থাত্ বুধবার কাঁথি থেকেই রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। আর আজ সেই কাঁথি থেকেই সদ্য বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের দুজনকে নজিরবিহীন আক্রমণ করলেন। আজ তিনি রাজ্যের পুর মন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,” আলিপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে টিকিট না পেয়ে কালীঘাটে গিয়ে ঢিল ছুঁড়েছেন। আর এখন অনেক কথা বলছেন।”
শুভেন্দু বলেন “কলকাতার মেয়র হিসেবে আপনি মানুষকে কি কী পরিষেবা দিয়েছেন সেটা এতদিন সবাই জেনে গিয়েছে। আমফান ঝড়ের পর শহর জুড়ে দশ দিন বিদ্যুত্ সংযোগ ছিল না। গোটা শহর পড়ে যাওয়া গাছে আটকে যায়। সেই গাছ কাটতে পারছিলেন না। পরে সেনাবাহিনীর উদ্যোগে গাছ কাটা হয়। এখন সবাই এখানে আসছেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় আসেননি কেন? সাংবাদিকদের সামনে কলকাতাকে মিনি পাকিস্তান বলেছিলেন। মিনি পাকিস্তান বলা নেতাদের মানুষ জবাব দিয়ে দেবে”। উল্লেখ্য, গতকাল এই কন্ঠি থেকেই ফিরহাদ হাকিম শুভেন্দুকে ‘বিশ্বাসঘাতক বলে মীরজাফরের’ সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
আজ শুভেন্দু সেই কথারই প্রত্যুত্তরে এদিন তাঁকে নিশানা করেছেন। শুধু ফিরহাদ হাকিম নয় এর পাশাপাশি তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়কেও ছাড়েন নি তিনি। শুভেন্দু আজ বলেন,” ১৯৭৭ সালে রিগিং করে ব্যারাকপুর থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন। তারপরই পরিস্থিতির বিচারে নিজেকে বদলে বলেছেন ইন্দিরা গান্ধীকে জেলে পুরতে হবে। আপনি বলেছেন আমাকে, ও তো হেরেছিল। ২০০৬ সালের নির্বাচনে ঢাকুরিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে আপনি ক্ষিতি গোস্বামীর কাছে হারেননি?”
এর পর একটু অবসর নিয়ে শুভেন্দু বলেন “তারপর বনগাঁয় উপনির্বাচনে আপনি তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন। পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ৩০০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে আপনার জন্য প্রচার করতে গিয়েছি। আপনাকে জিতিয়ে এসেছি”। এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরো বলেন,”এতদিন সৌগত রায়কে দল পাত্তা দেয়নি। যেই শুভেন্দু অধিকারী চলে গিয়েছে অমনি পাত্তা দেওয়া শুরু হয়েছে। এখন পায়ে শুভেন্দু কাঁটা ফুটেছে।” এদিন ফিরহাদ হাকিমের এক আত্মীয় তথা যুব তৃণমূল নেতাকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, “লাল চুল কানে দুল। সে তো যুব তৃণমূল”
আজ শুভেন্দু এভাবেই রণংদেহি মূর্তিতে গতকালের কটাক্ষের জবাব দিলেন। এছাড়া নিজের জেতা-হারা প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, “২০০১ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় কিরণময় নন্দের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে চাইছিলেন না। যাকে দাঁড় করানো হয়েছিল তিনি হঠাত্ই সরে দাঁড়ান। শেষ মুহূর্তে দলের স্বার্থে আমি লড়াই করি। একই ভাবে ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে লড়াই করি। আর মনে রাখবেন ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমি এবং আমার বাবা শিশির অধিকারী দুজনেই জিতি। সেবার তৃণমূল ৩০ আসনে নেমে গিয়েছিল।” তবে আজ শুভেন্দু বুঝিয়ে দিলেন তিনি কেনো রেবেল!