দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। দল ভেঙে বিধায়ক ও নেতৃত্বদের নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি! এই অভিযোগ করছিলেন বিভিন্ন মিটিং এ। এমনকী ভোট প্রকৌশলী প্রশান্ত কিশোর সহ দলের বর্ষীয়ান নেতাদেরকে নিয়ে তৈরি কমিটিকে বহাল করে দলের বেসুরো নেতাদের মানভঞ্জনের চেষ্টা করেছিলেন। তাতে কিছুটা কাজ এগোলেও সার্বিক পরিস্থিতি কিন্তু উলটপুরাণ হয়ে রয়েছে। যারা একবার বেঁকে বসেছেন তাদের সবার গলাতেই পিকে বিরোধিতার সুর। আর এবার তাই বেসুরোদের সঙ্গে নিজেই সরাসরি কথা বলতে শুরু করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসুরো নেতারা যাতে সংগঠনের কাজে হাল ছেড়ে না দেন তাই এই উদ্যোগ! এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
গত বছর থেকেই দলের অন্দরে ক্ষোভের ঢেউ। আর ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের হস্তক্ষেপ সেই ঢেউ তৈরির কারণ, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর প্রশান্ত কিশোরকে সরাসরি দোষারোপ করে দল ছেড়েছেন শুভেন্দু অধিকারী থেকে মিহির বিশ্বাস ও শীলভদ্র দত্তের মতো মন্ত্রী, বিধায়করা। সেই ড্যামেজ এখনো সারানো যায় নি উপরন্তু ক্ষত ক্যান্সারের মত বেড়েই চলেছে। সূত্রের খবর, সেই ক্যান্সার যাতে আর না বাড়ে তাই উদ্যোগী মমতা স্বয়ং। এমনকী শীঘ্রই বেসুরো মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে কথা বলবেন তৃণমূলনেত্রী। যদি তিনি সুরে ফিরেছেন বলে শোনা গিয়েছে। হুগলির বেসুরো বিধায়ক প্রবীর ঘোষালের সঙ্গে ইতিমধ্যে মমতার একপ্রস্ত কথাও হয়েছে। এই অবস্থায় তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় দু’দফায় তাঁর সঙ্গে কথাও বলেন। সেখানে প্রশান্তের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি করেছিলেন রাজীব। তার পর বিষয়টিতে মমতা হস্তক্ষেপ করছেন বলে খবর।
যদিও এখনো পর্যন্ত শুভেন্দুর সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলেন নি মমতা। শুভেন্দু বিজেপিতে চলে গিয়েছেন। আর এই জট খুলতে মাঠে নেমেছিলেন প্রশান্ত। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, বরং ক্ষতিই হয়েছে। তাছাড়া এই কাজ করার জন্যে প্রশান্ত কিশোর কে নিযুক্ত করেনি দল। এমন কী প্রশান্ত নিজে শুভেন্দুর সঙ্গে কথা বলতে কাঁথির বাড়িতেও গিয়েছিলেন। তবুও কাজেই লাগেনি কোনো মন্ত্র বা ফিস ফিস। যদিও এখন দলের অন্দরে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে শুভেন্দু বা রাজীবের মতো হেভিওয়েট নেতা না হলেও সেই নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মমতা কথা বলবেন।
দলীয় সূত্রে খবর, প্রশান্ত কিশোর পরামর্শদাতা হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়েও ভূমিকা নিতে শুরু করেছিলেন। তবে এই মূহুর্তে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে রাশ হাতে নিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীই। কারণ ভুলত্রুটি হলেই বিজেপি’র লাভ। আর সেটা কিছুতেই চাইছেন না দলনেত্রী। বিভিন্ন জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সেই একই বার্তাই দিয়েছেন মমতা।