দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ বিজেপির নবীন বরণ কর্মসূচীতে উপস্থিত হয়ে শুভেন্দু নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে বললেন, বিগত ২১ বছর ধরেযে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস করেছেন, এটা ভেবেই তাঁর লজ্জা লাগছে। উল্লেখ্য এ দিন কলকাতায় বিজেপি অফিসের সামনে সাংসদ সুনীল কুমার মণ্ডলের গাড়ি ঘিরে তৃণমূলের বিক্ষোভ চরম পর্যায়ে পৌঁছয়। তৃণমূল কর্মীদের মতে সুনীল মণ্ডল এখনো দল থেকে পদত্যাগ করেননি টাইন তাঁকে আটকানো কর্মীদের দ্বায়িত্ব। আর এই ঘটনা চাক্ষুস করে প্রতিক্রিয়া দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
উল্লেখ্য আজ সকালে থেকেই হেস্টিংস-এ বিজেপি তৃণমূল বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। একই দিনে একই সময়ে কিভাবে তৃণমূল ও বিজেপি মুখোমুখি কর্মসূচী সে নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিজেপি-তে যোগদানকারী নেতাদের সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছিল আজ। সেইসাথে এ দিন হেস্টিংস-এ বিজেপি অফিসের অদূরেই কৃষি বিলের প্রতি বিক্ষোভ জানিয়ে পথসভার জন্য মঞ্চ তৈরি করে তৃণমূল। আর সেখানে মাত্র দু তিনজন পুলিশের নিরাপত্তায় শয়ে শয়ে তৃণমূল কর্মী- সমর্থকরা সেখানে জড়ো হন।
আর ঠিক এ দিন সকালে বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য সাংসদ সুনীল মণ্ডল যেই হেস্টিংস-এ এসে পৌঁছন। তাঁর গাড়ির পথ আটকান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। এমনকি রাস্তায় শুয়ে পড়ে সাংসদের গাড়ি আটকানোর চেষ্টাও করা হয়। এই ঘটনা ঘটতে দেখে বিজেপি কর্মীরা এগিয়ে আসেন। আর এরপরেই এক কথা দু কথায় দু’ পক্ষে বচসা আর সেখান থেকে শুরু হয় হাতাহাতি। কোনওক্রমে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। এরপরই এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিস পাঠানো হয়। ব্যারিকেড করে দু পক্ষ’র সমর্থকদের রাস্তা আলাদা করে দেওয়া হয়। যাতে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়ানো যায়।
পড়ে বিজেপির অফিসে সংবর্ধনা গ্রহনের পড়ে এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “আজকে আমাদের জন্য এখানে সংবর্ধনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু তার আগে যে আচরণটা ঘটল, তাতে আমার ভাবতে লজ্জা লাগছে যে একুশ বছর ধরে আমি তৃণমূল দলটা করেছি। সত্যিই লজ্জা লাগছে। এই কালচার থেকে বাংলাকে বের করে আনতে হবে। ২১ বছর ধরে বাংলায় ফর দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি, বাই দ্য পার্টি ব্যবস্থা চলছে। ৩৪ বছর ধরে সিপিএম আমলেও তাই হয়েছে। সিপিএম-এর ছেঁড়া চটি পরেই আমরা একুশ বছর কাটিয়ে দিলাম। একমাত্র বিজেপি-ই পারে ফর দ্য পিপল, অফ দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে।”
শুধু একথাই বলে ক্ষান্ত হন নি শুভেন্দু। তিনি তৃণমূল কে দলের বদলে এখন কোম্পানী আক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন বাংলার মানুষ কে বুঝতে হবে যাতে কলকাতা এবং দিল্লিতে একই সরকার থাকে। এই নব্য বিজেপি নেতার মুখে সোনার বাংলা গড়ার কথাও শোনা যায়। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে যতদিন তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেননি নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্র ততদিন সরাসরি পুরোন দলকে আক্রমণ করেননি তিনি। কিন্তু বিজেপি-তে যোগদানের পর পরই একের পর এক হুশিয়ারি দিতে শুরু করেছেন। অভিষেক থেকে মমতা, সৌগত থেকে ফিরহাদ কারকেই আর বাকি রাখছেন না শুভেন্দু।
যদিও আজ সুনীল মন্ডলের গাড়ির সামনে তৈরি হওয়া বিক্ষোভ নিয়ে দলের বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায়ের বক্তব্য, সুনীল এখনো দল ছাড়েনি সুতরাং তাকে নিয়ে যদি কর্মীরা স্বতষ্ফুর্ত বিক্ষোভ দেখায় সেখানে পার্টি’র কী করার থাকে। তিনি সুনীলের উদ্দেশ্যে দলবিরোধী আইনে ব্যাবস্থা নেবেন বলেও জানান। অন্যদিকে কল্যাণ ব্যানার্জী জানিয়েছেন বিজেপি ক্ষ্যাপা ষাঁড় হয়ে গিয়েছে। দলের কর্মীরা দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখিয়েছে এখানে বিজেপির আগ বাড়িয়ে আসার কী দরকার ছিল?
তবে আজকের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে ইতিমধ্যেই কৈলাশ বিজয়বর্গীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’কে ফোনে বিস্তারে জানিয়েছেন। অন্যদিকে শুভেন্দু বিজপি অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁর গাড়ি ঘিরেও তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখতে শুরু করলে পরিস্থিতি আবারও অগ্নিগর্ভ হতে থাকে। তবে পুলিস মোতায়েন রয়েছে। হেস্টিংস থানাতে এই মর্মে বিজেপি অভিযোগ দায়ের করেছে। তৃণমূলের ঐখানে সভা করার অনুমতি ছিল কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।