দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সামনের মাসেই মকর সংক্রান্তির গঙ্গা সাগর মেলা। ফি বছর জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে এই পবিত্র স্নানের জন্য সাগরে জড়ো হন দেশ-বিদেশের পুণ্যার্থীরা। কিন্তু এখন করোনাভাইরাস আবহে রাজ্য সরকার এবার একটু ভিন্ন উপায়ে পুণ্যস্নান করানোর পরিকল্পনা করেছে। উত্তরাখণ্ডের প্রয়াগের কুম্ভমেলার পর গঙ্গাসাগর মেলা আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় পুণ্যস্নান। যেহেতু এই অনুষ্ঠানে দেশজুড়ে আসা বিপুল মানুষের সমাগম হয়ে থাকে তাই খুব সহজেই করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
এর বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নেওয়া হচ্ছে ডিজিট্যাল মাধ্যমকে। এবার মাউসের এক ক্লিকেই গঙ্গা-সাগর সঙ্গমের পবিত্র জল, পুজোর মিষ্টি এবং সিঁদুর পৌঁছে যাবে আপনার ঘরে। খরচ মাত্র ১৫০ টাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন এই ন্যূনতম খরচায় ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঘরে ঘরে গঙ্গাসাগর পরিষেবা দিতে চলেছে। সময় ও লাগবে খুব কম। বুকিং করার তিনদিনের মধ্যেই পাওয়া যাবে এই পরিষেবা। এই পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে তীর্থ সামগ্রী প্যাক। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে সুন্দরিণী প্রকল্পের কর্মীরা।


সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এই করোনা পরিস্থিতির কারণে যাঁরা স্বশরীরে গঙ্গাসাগর মেলায় আসতে পারবেন না, তাঁরা ঘরে বসেই যেমন যাবতীয় জিনিস পাবেন ঠিক তেমনই বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে গঙ্গাসাগরের লাইভ ভিডিয়ো দেখতে পাবেন। এছাড়া পুণ্যার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে থাকছে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা। যদি কোনও পুণ্যার্থী মেলায় হাজির হওয়ার পর পরীক্ষার করোনা পজিটিভ রিপোর্ট হন, তাহলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন তাঁকে হাসপাতালে ভরতি থেকে শুরু করে চিকিৎসা, সুস্থ করে বাড়ি পাঠানোর সমস্ত ব্যবস্থা করবে।


মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে সামগ্রিক সুরক্ষার জন্যে প্রশাসনের তরফে ড্রোন, সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। সর্বমোট ২৫টি ড্রোন ও ১০০০ সিসি টিভি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। আর এগুলো সব লাগানো থাকবে লট নম্বর আট থেকে সাগর মেলা গ্রাউন্ড পর্যন্ত। এবার মেলার ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার। গত বছরের মতো বয়স্ক এবং শিশুদের হাতে একটি কিউআর কোড সম্পন্ন রিস্টব্যান্ড দেওয়া হবে। যদি কেউ হারিয়ে গিয়ে থাকেন তাহলে হাতের QR code স্ক্যান করে প্রতিটি মানুষকে নথিভুক্ত করা তাঁর নাম ও ঠিকানা অনুযায়ী বাড়ি ফেরানো সম্ভব হবে। এতে হারিয়ে যাওয়ার ভয় আর থাকছে না। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে থাকবে প্রচুর স্বেচ্ছা সেবক।