দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: পশ্চিমবঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) কবে প্রণয়ন হবে, সে বিষয়ে কোনও লিখিত আশ্বাস দেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এবার শোনা যাচ্ছে এরপর থেকেই দলের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের। এবার বেসুরো শান্তনুর দাবি করোনা ভাইরাসের সাথে নির্বাচনের যদি কোনও সম্পর্ক না থেকে থাকে তাহলে সিএএ (CAA) এর ও কোনও সম্পর্ক আছে বলে তাঁর মনে হয় না। উদাহরণ হিসেবে শান্তনু বিহারে বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে এনেছে।
উল্লেখ্য মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শুক্রবার সদ্য উত্তরবঙ্গ সফর শেষে গাইঘাটায় ফিরেছেন। আর ফিরেই তিনি জানান, বর্তমানে করোনার সঙ্গে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনের কোনও সম্পর্ক নেই। তাহলে বিহারের ভোট করা উচিত হয়নি। এর সাথে সাথে তিনি এই হুঁশিয়ারিও দেন, “যদি নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নে দেরি হয়, তাহলে ‘যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের উদ্বাস্তু, নমশূদ্র মতুয়া এবং আরও যে বৃহত্তর সম্প্রদায় আছে, তাদের সঙ্গে থাকব।” অর্থাত্ শান্তনু এই ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন যে যারা তাদের অধিকার কে মর্যাদা দেবে তিনি তাদের দিকেই যাবেন।
প্রসঙ্গত, গত ২০’শে ডিসেম্বর বোলপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের উত্তরে শাহ জানিয়েছিলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের নিয়ম এখনও তৈরি হয়নি। করোনার কারণে এত বড় কর্মসূচি লোকবলের অভাবে পিছিয়ে গিয়েছে। করোনার টিকাকরণ শুরু হলে সে ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে। আর শাহ’র সেই মন্তব্যের পর থেকেই বেসুরো হতে শুরু করেছেন শান্তনু। এমনিতেই তাঁকে ইদানিং বিজেপির একাধিক কর্মসূচিতে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে শান্তনুর কাছে ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে।
যদিও তৃণমূলে যোগের প্রসঙ্গে সরাসরি কিছু না বললেও বনগাঁর এই সাংসদ জানান, “মানুষের স্বার্থের জন্য অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সিদ্ধান্তে রাজনীতিতে এসেছিলাম। কিন্তু সেই স্বার্থ যদি বিঘ্নিত হয়, তাহলে আগামিদিনে ‘অনেক কিছু’ করতে পারি। সিএএ কার্যকর না হলে আমার সংঘ যা সিদ্ধান্ত নেবে, আগামিদিনে আমি সেখানেই থাকব।”
যদিও শান্তনুর সেই মন্তব্যের পালটা উত্তর দিয়েছেন ঠাকুরবাড়ি ওপর সদস্য তথা তৃণমূলের নেত্রী মমতাবালা ঠাকুর। শান্তনুকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, “কোন মতুয়া শান্তনুকে ভোটে দাঁড়াতে বলেছিলেন? বিজেপি বুঝতে পেরেছে যে এখন সিএএ কার্যকর করা হলে মতুয়ারা আরও দূরে সরে যাবেন। তাই এরকম মন্তব্য করা হচ্ছে।” যদিও মমতাবালা ঠাকুরের এই বক্তব্য’র পাল্টা শান্তনু’র প্রতিক্রিয়া জানা যায় নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে মতুয়াদের কে নিয়ে রাজনীতি পুরোনো নয়। ফলে তারা যদি এখন তাদের দাবি নিয়ে সোচ্চার হবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে সামনের দিনগুলোই বলবে শান্তনু ঠাকুর কোন পথে হেঁটে যাবেন।