দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রবিবার দাঁতনের সভায় তাঁর এই মন্তব্য নতুন করে সমালোচনার রসদ জোগাল রাজনৈতিক মহলে। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের জনসভায় তৃণমূল বিরোধী সুর চড়িয়ে বক্তব্য রাখলেন বিজেপি (BJP) নেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। তিনি টানা পাঁচ বছর ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ মন্ত্রী। কিন্তু ওটা আসলে নামমাত্রই। আসলে তাঁর কোনও পোস্ট ছিল না, তিনি ছিলেন ‘ল্যাম্পপোস্ট’। এমনটাই অভিযোগ করলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “এতগুলো বছর ধরে সরকারটা চলেছে দেড়জনের উপর নির্ভর করে।” কলকাতার ৩, ৪ জনের হাতেই দল এবং সমস্ত মন্ত্রীর রাশ ধরে রাখা। সংগঠন টা নামেই। আমি নামমাত্রই মন্ত্রী ছিলাম। আসলে ল্যাম্পপোস্ট ছিলাম।” তবে তাঁর উল্লেখ করা এই দেড়জন কারা, তা নির্দিষ্টভাবে তিনি নাম উল্লেখ করেন নি।
রাজ্য মন্ত্রিসভার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং সর্বোপরি তৃণমূল নেত্রীর অত্যন্ত ভরসার পাত্র ছিলেন অধিকারী পরিবারের মেজো পুত্র। অথচ, দু’দশকের দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর তাঁর আক্ষেপ, তিনি ছিলেন ‘ল্যাম্পপোস্ট’ মাত্র! প্রসঙ্গত ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত শুভেন্দু পরিবহণ, সেচ, জলসম্পদ – তিন দপ্তরের দায়িত্ব একা হাতেই সামলেছেন । এরপর ২৭ তারিখ সমস্ত দপ্তরের মন্ত্রিত্ব থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ভোটে নন্দীগ্রামের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর শুভেন্দু অধিকারীকে শুধু পরিবহণ দপ্তরের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে তাঁর দক্ষতায় ভরসা করে আরও দুটি দপ্তরের ভারও দেওয়া হয় তাঁকে।
আসলে ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহর হাত থেকে বিজেপির পতাকা নেওয়ার পর তৃণমূলকে (TMC) সরাসরি আক্রমণ করেই চলেছেন শুভেন্দু। আর যেদিন থেকে বিজেপির প্রকাশ্য জনসভা করছেন, তাঁর আক্রমণের নিশানায় শুধুই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ‘ভাইপো’ বিষয়ে আক্রমণ দাঁতনের সভাতেও অব্যহত ছিল। এর আগেই বলেছিলেন, ‘তৃণমূল কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে’। আজ রবিবার আরও তীব্র শ্লেষের সুরে বললেন, ‘আমি দলটার ভিতরে ছিলাম, ঘেন্না ধরে গেছে! আপনাদের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে এতদিন আমি চুপ ছিলাম কেন? এতদিন এদের তাড়ানোর মত পরিস্থিতি ছিল না। তাই চুপ ছিলাম।”
আজও শুভেন্দু অধিকারী উল্লেখ করেন যে বাম আমলে তাও SSC পরীক্ষা দিয়ে বাংলার ছেলেমেয়ে চাকরি পেয়েছে। আর এখন সব পদ গুলোকে অ্যাবসর্ব করে শুধু সিভিক ভলান্টিয়ার তৈরি করেছে। এমন চাকরি যে ছেলেদের বিয়ে হচ্ছে না মাইনে দেখে। এই মূহুর্তে বাংলা ও দিল্লিতে একই সরকার চাই তাহলে বাংলার উন্নয়ন হবে। বাংলার ছেলেমেয়েদের কর্ম সংস্থান হবে। মাইনে বেশি হবে।”
আজ শুভেন্দু জানান, “কেন্দ্রের বহু প্রকল্প নাম বদলে চালাচ্ছে তৃণমূল সরকার আক্রমণে দলের প্রাক্তন রাজ্য কমিটির সদস্যরা।” তবে রবিবার শুভেন্দু সবায় উত্সাহী জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত, তিনি জানিয়েছেন “মাত্র দুটি মন্ডলের লোকের জমায়েত হয়েছে। মাত্র ৪ দিনের মধ্যে বিজেপি কর্মীরা এই রাজনৈতিক সমাবেশের আয়োজন করেছেন।” আজ শুভেন্দু এও জানান যে তৃণমূলের যাবতীয় কিছু ওই দক্ষিণ কলকাতাতেই সীমাবদ্ধ। জেলা ব্রাত্য। এবার দেখার এই প্রশ্নের ও কটাক্ষের জবাব তৃণমূল কিভাবে দেয়।