দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের প্রত্যাহার দাবি করে স্মারকলিপি জমা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ৬ পাতার সেই স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় লাগাতার সাংবিধানিক সীমারেখা লঙ্ঘন করছেন। এমনকি রাজ্যপাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মানছেন না। বুধবার তৃণমূল ভবনে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এক সাংবাদিক বৈঠকে স্মারকলিপির ব্যাপারে জানান।
সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে লাগাতার রাজ্য সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন। জগদীপ ধনখড় সেভাবে সাংবিধানিক রীতিনীতি মানছেন না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না মেনে বিভিন্ন সময় টুইট করে তিনি নির্বাচিত মন্ত্রিসভার সমালোচনা করেছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। শুধু মুখ্যমন্ত্রী নন এমনকি বিধানসভার স্পিকারেরও সমালোচনায় সরব হয়েছেন যা আসলে সংবিধানবিরোধী।
লাগাতার সাংবিধানিক নির্দেশিকা অমান্য করায় সংবিধানের ১৫৬ (১) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতিকে তাঁর সম্মতি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে এই স্মারকলিপি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুখেন্দুশেখর।
এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের দাবি, সংবিধান অনুযায়ী শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের মাধ্যমে রাজ্যপাল নিজের কর্তব্য নির্বাহ করতে পারেন। তবে যেকোনো বিষয়ে রাজ্য সরকারকে আপত্তি তিনি জানাতে পারেন। তবে জগদীপ ধনখড় প্রকাশ্যে মন্তব্য করার অধিকার নেই তাঁর। কিন্তু নিজের সাংবিধানিক সুরক্ষাকবচ ব্যবহার করে একের পর এক সরকারি বিভাগের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন তিনি। এমনকী হুমকি দিচ্ছেন পুলিশকে। যার কোনও নজির গোটা দেশে নেই। এমন কী সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন রাজ্যের নির্বাচনের বিষয়টি দেখবেন নির্বাচন কমিশন। তবে এই বিষয়ে বিরোধীদের বিশেষ করে বিজেপি’র বক্তব্য সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৬৩ (১) (২) (৩) অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন বিধিনিষেধ আরোপ করার আগে পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচন সুষ্ঠভাবে হবে কিনা তা দেখার দ্বায়িত্ব রাজ্যপালেরই।
এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনো মেলেনি। তবে এর আগে রাজ্যপাল বলেছেন যে এই রাজ্যের নির্বাচনে রক্ত গঙ্গা বয়ে থাকে, হিংসার তান্ডব হয়ে থাকে, যা সমগ্র দেশের কাছেই অনভিপ্রেত। তিনি মনে করেন রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা সঠিক থাকলো কিনা একজন প্রধান সেবক হিসেবে সেটা দেখার দ্বায়িত্ব রাজ্যপালেরই।
এই বিষয়ে সুজন চক্রবর্তী’র বক্তব্য, বামেরা বহু আগেই এই রাজ্যপালের এই পদ তুলে দিতে চেয়েছিল। এই সাম্মানিক পদের প্রয়োজন ইংরেজরা চলে যাওয়ার পরই তুলে দেওয়া উচিত ছিল।