দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ২০২১ শে’ ই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন (Assembly Election 2021)। আর ঠিক এর আগেই পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলে আধিপত্য কার তা নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে গেরুয়া ও সবুজ শিবির। এর আগেই এক বাউলের বাড়িতে দুপুর বেলায় ঢাক ঢোল বাজিয়ে অমিত শাহ গিয়েছিলেন মধ্যাহ্ন ভোজনে। আর এর পর পরই একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে বীরভূম জেলা সফরে গত দু দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই সফর থেকে ফেরার জন্যে হেলিপ্যাডে পৌঁছনোর আগে কিছুটা অবাক করেই শান্তিনিকেতনের বল্লভপুরে আদিবাসী গ্রামে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে দেখা করলেন আদিবাসী মহিলাদের সাথে। শুনলেন তাদের অভাব-অভিযোগ। একজন দলীয় কর্মীদের মতই বোঝালেন ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধার কথা। মুখ্যমন্ত্রীর পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন অনুব্রত মণ্ডল।
অমিত শাহের পালটা রোড শো এ চার কিলোমিটার পথে লোকের রেকর্ড ভিড় তৈরি করাই ছিল তৃণমূলের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অবশ্য ভিড়ের নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম সফর সফল বলেই দাবি জেলা তৃণমূলের। অনুব্রত মন্ডলের গড় বলে পরিচিত বোলপুরে রোড শো’র সাফল্যেই শাসক শিবির নতুন করে উজ্জীবিত। বুতাই ধবার সকালে কলকাতায় ফেরার আগে জনসংযোগ এর বাস্তব দিকটা খতিয়ে দেখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোজা চলে যান শান্তিনিকেতনের বল্লভপুরের আদিবাসী গ্রামে। সেখানে আদিবাসী মহিলাদের একটি হোটেলে বসেন। জিজ্ঞাসা করেন কী কী রান্না হচ্ছে। তাদের সাথে কথা বলেন তিনি।
আজ মুখ্যমন্ত্রী ওই মহিলাদের কাছে জানতে চান তারা সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা ঠিকমতো পাচ্ছেন কিনা। এরপর আদিবাসী মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার পরই এলাকায় একটি দোকানে ঢুকে পড়েন। সেখানে সেই সময় রান্নাবান্না চলছিল। তিনি তাদের মতই রক্তমাংসের মানুষ বোঝানোর জন্যে ওই দোকানে খুন্তি ধরেও রান্না করতে দেখা গেলো তাঁকে। ওই দোকানে বসেই তিনি কাগজের কাপে চা খান।


যদিও আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর আগমনের খবরে তাঁকে একটিবার দেখার জন্য স্থানীয়দের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই ঝটিকা সফরের পরেই হেলিকপ্টারে চড়ে সোজা কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর অনুযায়ী প্রথমে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে নেমেছেন তিনি। সেখান থেকেই সোজা যাবে নবান্নে চলে এসেছেন ।
হটাত্ এভাবে সরাসরি সাক্ষাতে জনসণ্যগ কেনো? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণবঙ্গের এই আদিবাসীদের সমর্থন কিছুটা হলেও হাত ফসকে বেরিয়ে গিয়েছিল শাসকদল তৃণমূলের। যেহেতু সামনেই বিধানসভা নির্বাচন আর বিজেপি যেহেতু লালমাটিকে আশ্রয় করেই রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজাচ্ছে। সেই আবহে পায়ে হেঁটে, আঞ্চলিক মানুষদের হাতে হাত রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাই বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে তিনি তাঁর দলের স্লোগান, মা-মাটি-মানুষের মতই! শাসকদল জানেন যদি আদিবাসীদের মন পাওয়া যায় তাহলে পশ্চিমাঞ্চলের হারানো মাটি পুনরায় ফিরে পাওয়া সম্ভব। আর সেই কারণেই বাঁকুড়ার আদিবাসী গ্রামের পর বীরভূম (Birbhum) সফরেও আচমকা আদিবাসী গ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর ঝটিকা সফর!