দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো :তৃতীয়বারের জন্যে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তুলতে চলেছে নদিয়ার গর্বের সন্তান ‘অনুপম’। এবার সে দেশলাই কাঠি দিয়ে তৈরি করে ফেলেছে দিল্লির বিখ্যাত ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র স্মারক। হ্যাঁ, তার এই বিস্ময়কর কাজের নজির কিছু নতুন নয় এর আগেও ২০১৮ সালে স্টেপলারের পিন দিয়ে চেন এবং ২০১৯ সালে আপেল বীজের সাহায্যে মালা তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সমগ্র বিশ্বকে।
বিশ্বের বিভিন্ন অত্যাশ্চর্য কাজের রেকর্ড রাখা হয় যে বইয়ে অর্থাত্ গিনিস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ দু’দুবার স্বর্ণাক্ষরে তার নাম নথিভুক্ত করার পর অবশেষে হ্যাটট্রিকের পথে তার কঠোর প্রচেষ্টায় তৈরি করা “অমর জওয়ান জ্যোতি ম্যাচ স্টিক মোজাইক ইমেজ”।
নদীয়ার শান্তি পুরের বাসিন্দা অনুপম সরকার পেশায় একজন বাচিক শিল্পী। তার নেশা সাধারণ ও ক্ষুদ্র জিনিসের সহায়তায় অসাধ্য সাধন করা যেমন এবার তিনি দিল্লির ইন্ডিয়া গেটে অবস্থিত অত্যন্ত সম্মানের সেই বিখ্যাত শহীদ স্মৃতিসৌধর মিনিয়েচার চিত্রপট তৈরি করেছেন।


তবে বিশ্বে এই কাজের অধিকারী অনুপম একা নন এর আগে ২০১৩ সালের ১১ ই জুন ইরানের মেসম্ রহমানি আনুমানিক ১৩,৯৫১টি দেশলাই কাঠি ব্যবহার করে ইউনেস্কোর লোগো অনুকরণে একটি শিল্পকর্ম বিশ্ব শান্তি দিবসে সকলের সামনে নিয়ে এসেছিলেন। তার সেই কৃতকর্ম তত্কালীন ইউনেস্কোর সেক্রেটারির ব্যবস্থাপনায় খ্যাতির শীর্ষে স্থান করে নিয়েছিল।
তবে অনুপম সরকারের এই সৃষ্টিতে আনুমানিক ২,০০,০২০ এরও বেশি দেশলাইয়ের কাঠি ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি ৪ ফুট বাই ৬ ফুট একটি প্লাইউডের বোর্ডের উপর ১ ইঞ্চি পুরু ওই “অমর শহীদ স্মৃতিসৌধ “তৈরি করেছেন দেশলাই কাঠি জুড়ে জুড়ে। এই অসামান্য শিল্পকর্মটি তৈরি করতে তার দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস সময় লেগেছে।
এখন সারা বিশ্বের সাথে সাথে আমাদের দেশ ও রাজ্যও লকডাউনের ঘেরাটোপে বন্দী। আর এই লকডাউনে গৃহবন্দী থাকার জন্যই এই শিল্পকর্ম তৈরিতে বেশ কিছুটা সময় বেশি দিতে পেরেছেন তিনি।
আগামী ১৫’ই আগস্ট ভারতেবর্ষের স্বাধীনতা দিবসের দিন শান্তিপুর শহরের চাকফেরা নাট মন্দির প্রাঙ্গণে কৃতকর্ম টি সকলের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে। সেদিন কোভিড-১৯ বিধি মান্য করে সংঘটিত সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন চারজন সরকারি আধিকারিক এবং বিভিন্ন মাধ্যমের সাংবাদিকরা।
অনুপম সরকারের কৃতকর্মটি নির্মাণে এবার যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছেন শান্তিপুর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সুমন দে। তার অনুভুতি সম্পর্কে প্রশ্নে অনুপম বাবু জানান “বিগত দিনে দুটি রেকর্ড সৃষ্টি করে পরোক্ষভাবে দেশের কৃতিত্ব প্রমাণ করতে পেরেছিলাম, এবারে সরাসরি দেশের শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত।
তিনি আরও জানান যে এবারের প্রচার অনুষ্ঠানটি সরকারি অনুমোদনে ও ব্যবস্থাপনায় সংঘটিত হচ্ছে বলে তিনি বর্তমান রাজ্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ।
তার দাবি এটা শুধু তার একার কাজ নয়, অনেক ভালো মনের মানুষ তাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তিনি তার এই কাজের মধ্য দিয়ে শুধু অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাই নয় সেই সাথে ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’ এই বার্তাও পৌঁছে দিতে চাইছেন বিশ্ব দরবারে।