দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রী (MOS) লক্ষ্মীরতন শুক্লা, যিনি এবং তৃণমূল ছেড়ে বলেন যে তিনি রাজনীতি থেকে বিরতি নিচ্ছেন। আজ নিজের ক্রিকেট অ্যাকাডেমি’র মাঠে বসেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুক্লা বলেন, “আমি ক্রিকেট খেলার মতোই সততার সাথে রাজনীতি করেছি। ক্রিকেটার হিসেবে আমার পরিচয় সবচেয়ে মৌলিক। আপাতত, আমি খেলাধুলার উপর মনোযোগ দেবো। আমি এমএলএ হিসেবে আমার মেয়াদ শেষ করবো… যেহেতু আমি রাজনীতি থেকে বিরতি নিতে যাচ্ছি, তাই দলে যোগদানের প্রশ্ন ওঠে না।”
উল্লেখ্য, গত মাসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে তৃণমূল হেভিওয়েট এবং দলের নন্দীগ্রামের ম্যাসকট শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া পার্টিতে যোগ দেওয়ার পর পরই শুক্লার পদত্যাগ আসে। ফলে তাঁর বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে।
‘আপাতত, আমি খেলাধুলায় মনোনিবেশ করবো’
-লক্ষীরতন শুক্লা
শুক্লা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে জানিয়েছেন যে তিনি রাজনীতি ছেড়ে আবার ক্রিকেটে ফিরে আসার পরিকল্পনা করছেন। তিনি তৃণমূল প্রধানকে দল ও রাজ্য সরকারের সকল পদ থেকে মুক্তি দিতে অনুরোধ করেন। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্তন এই ক্রিকেটারকে “ভালো ছেলে” বলে অভিহিত করে বলেন যে তার এবং দলের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই।
‘তৃণমূল কংগ্রেসের তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়বে’
-বিজেপি
যদিও শুক্লার পদত্যাগ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন যে সবে তো শুরু, এবার রাজ্যের ঘরে ঘরে পদ্ম ফুটবে, সেই সাথে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের অংশ হতে পেরে তিনি সত্যিই লজ্জিত। আজ লক্ষীরতন শুক্লা নিজের ফেসবুক ওয়ালে সৌরভ গাঙ্গুলীর সাথে নিজের একটি স্কেচ শেয়ার করে লিখেছিলেন যে একজন সঠিক নেতা (ক্যাপ্টেন) দলকে নেতৃত্ব’ দেন না সেই সাথে দলের সকলকে নেতৃত্ব দানে উদ্বুদ্ধও করেন। আর এই পোস্ট নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়ে যায়। আর এই প্রসঙ্গে দুপুরে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে শুক্লা জানান যে ওই পোস্ট এর সাথে রাজনীতির কোনো যোগাযোগ নেই। তবে আপাতত তিনি কোনও দলের সাথেই নেই।


এদিকে আজ বিকেলে অন্য একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বিজপির নেতা শমিক ভট্টাচার্য বলেন সৌরভের সুস্থ হওয়ার অপেক্ষা এতদিন শুক্লা তৃণমূলের হয়ে ব্যাট করেছে, এবার বোলিং করবে। আর এই জল্পনা আরও একবার সৌরভ গাঙ্গুলী’র বিজপিতে যোগদানের গুজব কে হওয়ায় দিলো।
আজ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে শুক্লা বলেন যে তাঁর এই তৃণমূলের মন্ত্রী পদ ছাড়ার পর অনেকেই অনেক কথা বলছেন, তাদের সেই মন্তব্যে’র প্রতি আমার শ্রদ্ধা রইল। তবে আমি মমতা ব্যানার্জী ও দলের প্রতিটি কর্মীর কাজের জন্যে কৃতজ্ঞ। তবে ২০২১ শে বিধানসভা নির্বাচনে কাকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান, এই প্রসঙ্গে লক্ষী রতন শুক্লা জানিয়েছেন যে, এটা অনেকটা ক্রিকেট ম্যাচের মতই। সেই জিতবে যে ভাল খেলবে। সুতরাং লক্ষীর কথার মধ্যেই যে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ এরকম বিষয় যে লুক্কায়িত সে কথা বলাই বাহুল্য। তবে আপাতত তিনি একজন বিধায়ক ও মানুষ হিসেবেই মানুষের সেবা করতে চান, সেকথাই বার বার জোর দিয়েছেন।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসকে দল নয়, একটি কোম্পানি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন শুভেন্দু, বিজেপি তে যোগ দেওয়া নিয়ে শুভেন্দু বলেন “আমরা ওই কোম্পানি থেকে বেরিয়ে এসেছি এবং একটি সঠিক রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ পেয়েছি।
বুধবার বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং দাবি করেছিলেন যে জানুয়ারিতে তৃণমূল কংগ্রেস একটি সাংবিধানিক সংকটের সম্মুখীন হবে। বিজেপি শক্তিশালী আরও জানিয়েছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অনেক সদস্য বিজেপিতে যোগ দিতে আগ্রহী। বিজেপি সাংসদ সিং আরও বলেন, যদি তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে ইচ্ছুক তৃণমূল সদস্যদের নাম প্রকাশ করেন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ তাদের গ্রেফতার করবে।