দ্যা ক্যালকাটামিরর ব্যুরো: করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার হার যথেষ্ট ভাল হলেও হাসপাতালে বেডের অভাব মানুষকে বেশি শঙ্কিত করছে। রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে দৌড়ে বেরিয়ে হয়রানির ঘটনাও ঘটছে প্রচুর। নিত্যদিনই হাসপাতাল না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ উঠছে। স্বাভাবিকভাবেই জনমানসে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে নিত্যদিন। এই সমস্যার সাধু সমাধান করতে কলকাতা পৌরসভা এগিয়ে এসেছে নতুন এক নিয়ম নিয়ে।
এই নতুন নিয়মে হাসপাতালে যাওয়ার পর যদি কোনও রোগীকে সেই হাসপাতাল ভরতি নিতে না পারে, তাহলে রোগীর পরিজনদের আর চিন্তিত হওয়ার দরকার নেই। অন্য হাসপাতালে রেফার করলে শয্যা বুক করে দিতে হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালকেই। তখন ব্যবহার করা হবে ‘রেফারেল কোড’। এই বিধি কলকাতা পৌরসভার অন্তর্গত হাসপাতালগুলোর জন্যেই প্রযোজ্য।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মুখ্যমন্ত্রীর দৈনিক ২৫ হাজার টেস্টের ঘোষণার পর পর সমগ্র বাংলায় কোভিড টেস্টের সংখ্যাও ছুঁতে চলেছে ১০ লাখের গণ্ডি। মঙ্গলবারের স্বাস্থ্য দপ্তরের বিবৃতি অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২২,৩১৫ নমুনা-সহ এ পর্যন্ত মোট ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার নমুনা টেস্ট হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের ধারণা বুধবারও গত ২৪ ঘণ্টার মতো টেস্ট হলে, এক শতাংশ জনসংখ্যার নমুনা টেস্টের একটা মাইলস্টোন স্পর্শ করবে রাজ্য।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব তথা কলকাতা পুরসভার দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান- “শুধুমাত্র করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে”।
আসলে অনেক উপসর্গহীন রোগী অন্যান্য রোগ নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। সেই সময় তাঁদের করোনা টেস্ট করা হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে অনেক রোগীরই রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। তখন নন কোভিড হাসপাতাল থেকে রোগীদের বলা হচ্ছে কোভিড হাসপাতালে যেতে। কিন্তু অনেক সময়ই কোভিড হাসপাতালগুলিতে গিয়ে বেড পাচ্ছে না রোগীর পরিবার। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরেও বেড পাওয়া যাচ্ছে না।
এমত পরিস্থিতিতে পুরসভার প্রশাসনিক মণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী, কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার, আইএমএ-র রাজ্য সম্পাদক শান্তনু সেন বৈঠকে বসেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে। এই বৈঠক শেষে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান- “কোনও হাসপাতালে যাওয়ার পর কোনও রোগী করোনা পজিটিভ হলে তাঁদের সরকারি বা সরকার অনুমোদিত করোনা হাসপাতালে বেড বুক করে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে একটি রেফারেল নম্বর দেওয়া হবে”।
উল্লেখ্য, করোনা আবহে রোগী ফেরানোর অভিযোগ শুধু বেসরকারি ক্ষেত্রে নয়, সরকারি ক্ষেত্রেও বারবার উঠেছে। তাই গত জুন মাসেই নোটিফিকেশন জারি করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দেয়, কোনও পরিস্থিতিতেই কোনো রোগী ফেরানো যাবে না। শুধু তাই নয় সেই নির্দেশে আরও বলা হয়েছে যে সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগী ফেরানোর অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে সার্ভিস রুল অনুযায়ী সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে বাতিল করা হতে পারে লাইসেন্সও।
যদিও সাধরণ মানুষের অভিযোগ সেই নির্দেশের পরও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তণ হয়নি । তাই এবার অবস্থা বেগতিক দেখে কলকাতা পুরসভা কোমড় বেঁধে নেমে পড়েছে অচলাবস্থা সামাল দিতে। তাই রাতারাতি চালু হতে চলেছে নতুন নিয়ম।