দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গতকাল অযোধ্যার রামমন্দিরের ভূমিপুজোয় পাঠানো ঠাকুরনগরের পবিত্র মাটি ও জল গৃহীত না হয়ে ফেরত এসেছে! হ্যাঁ এমনই অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ ও ঠাকুরবাড়ির বৌমা মমতা ঠাকুর। এমন কী তিনি মতুয়া সম্প্রদায় কে “বিভীষণ” আখ্যা দিয়ে শান্তুনু ঠাকুরকে ঠাকুরবাড়ি থেকে বহিষ্কারের দাবি তুললেন । অন্যদিকে ঠাকুর পরিবারের বিজেপি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাম মন্দিরের জন্য ঠাকুরবাড়ির মাটি গৃহীত। শান্তনু ঠাকুর তৃণমূল ও মমতা ঠাকুরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক স্বার্থে গুজব রটানো ও অভিসন্ধির অভিযোগ এনেছেন।
অযোধ্যার ভূমি পুজোয় মতুয়া সম্প্রদায়ের পাঠানো পবিত্র জল মাটি পাঠানো এবং তা গৃহীত হয়েছে কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। আর এর সাথে সাথে এই জল মাটিকে কেন্দ্র করে ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
বৃহস্পতিবার বনগাঁর প্রাক্তন সংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুর বনগাঁ দেবগড় এলাকায় মতুয়াদের একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। তিনি সেখানে তাঁর বক্তব্যে শান্তনু ঠাকুরকে আক্রমণ করে বলেন- আমি বলবো আমার ঘরের ভিতরেই রয়েছে বিভীষণ। এপার বাংলার মতুয়া ঠাকুরবাড়ির বিভীষণ হলেন শান্তনু ঠাকুর।
তিনি আরও বলেন যে ” শ্রী রামচন্দ্রের জন্মভূমি অযোধ্যাতে ভূমি পুজোয় বাংলাদেশের ওড়াকান্দির পবিত্র কামনা সাগরের জল ও ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ির মাটির যে অপমান হয়েছে তাতে ভারত বর্ষ তথা সারা পৃথিবীর মতুয়ারা গর্জে উঠেছে। তাঁর মতে, দুলাল বর এবং শান্তনু ঠাকুরের দাবী মত অযোধ্যা থেকে জল এবং মাটি যে প্রত্যাখ্যান করা হয় নি আর তা সত্যি হলে আরএসএস এর পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হোক। আমরা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের পক্ষ থেকে চাইছি বিভিন্ন জায়গায় শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হবে এবং কুশপুত্তলিকাও দাহ করা হবে। আমাদের আরাধ্য হরি গুরুচাঁদকে সে কেন অপমান করল? মতুয়া সমাজকে কেন সে অপমানিত করল? তার জবাবদিহি তাকে করতেই হবে। ” তৃণমূল নেত্রী মমতা ঠাকুর গর্জে ওঠেন।
এ প্রসঙ্গে শান্তনু ঠাকুরের দাদা তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি সুব্রত ঠাকুর জানান, ঠাকুর বাড়ির পবিত্র মাটি রাম মন্দির নির্মাণের জন্যে গৃহীত হয়েছে। কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল তার স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য গুজব রটাচ্ছে। মমতা ঠাকুর প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য -“তিনি যা বলেছেন তা তার নিজস্ব মতামত। উনি কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পদে আছেন হয়তো দলের চাপে এসব ভ্রান্ত কথাবার্তা বলেছেন।
রাম মন্দির নিয়ে কয়েকশ বছরের বিতর্ক থামতে না থামতেই বঙ্গ রাজনীতিতে ‘জল-মাটি’ নিয়ে এই তরজা আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি উত্তেজক পরিস্থিতি তৈরি করল সে বলাই বাহুল্য।