দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মাছের রাজা ইলিশ। বাঙালদের একচ্ছত্র অধিকারের এই মাছ ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলা (ঘটিদের) সব পাতেই সমান হিট। এই মাছের স্বাদে নেই কাঁটাতারের যন্ত্রনা রয়েছে শুধু তৃপ্তি আর প্রাণ ভরা রসনা। কিন্তু দুক্ষের বিষয় এবার ইলিশ বাংলা বিমুখ। না তার দুটো সঙ্গত কারণ, এক- এবারে দক্ষিণ বঙ্গের প্রতি বর্ষার অবহেলা আর দুই, করোনা আবহে মত্স জীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা সহ বেশ কিছু সমস্যা।
যদিও মাছ ধরা শুরু হয়ে গিয়েছে কয়েক মাস আগেই তবুও এই উপরিউক্ত দুই কারণেই বাজারে ঠিক ভাবে রুপোলি ইলিশের যোগান নেই। তাছাড়া অন্যান্য বারের মত এবার কিন্তু দীঘার সমুদ্রে রুপালি ইলিশের দেখা নেই। যা মৎস্য জীবী থেকে শুরু করে মাছে-ভাতে বেঁচে থাক সাধারণ মানুষের মনে যথেষ্ট চিন্তা আর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল ।
যদিও কারণ হিসেবে মত্সজীবীরা জানিয়েছিলেন বর্ষাকালের খাম খেয়ালীর জন্যে দীঘা সন্নিহিত মোহনা অঞ্চলের নিকটবর্তী সমুদ্রে ইলিশের ঝাঁকের অমিল ছিল। তাছাড়া যে গুলো ছিল সেই ইলিশ মৎস্য জীবীদের জালে ধরা দিচ্ছিল না কয়েক মাস ধরেই। কিন্তু অবশেষে খুশির খবর শোনা গেল আজ। সুত্র মারফত খবর, সমস্ত অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বুধবার দীঘার গভীর সমুদ্র থেকে ফিরে আসা কয়েকটি ট্রলারে বেশ অনেকটাই রুপোলী ইলিশ এসেছে!
তবে যোগান কম আর বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় চড়া দামে নিলাম হচ্ছে এই রুপালি ইলিশ। দীঘার মোহনা পাইকারী ফিশ মার্কেটে (আড়তে) আজ এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের কেজি প্রতি দাম ২০০০ টাকা থেকে শুরু করে ২২০০ টাকা, আর ৫০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের পাইকারি দর প্রতি কেজি ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা। খুচরো বাজারের আসার পর সেগুলো যে বেশ আরও চড়া দামে বিক্রি হবে সে কথা বলাই বাহুল্য।


আসলে কয়েক মাস লকডাউন থাকার ফলে মাছ ধরা ও মাছ বিক্রি করায় প্রশাসনের বিধি নিষেধ ছিল। বন্ধ করে রাখা ছিল মৎস্য নিলাম কেন্দ্র। যদিও সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আবার ১৫’ জুন থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে বেরিয়েছিল এই ট্রলার গুলি কিন্তু খুশির খবর আসতে আসতে ১২’ই আগস্ট হয়ে গেল।
মৎস্য জীবীদের ওই ট্রলারগুলি চেপেই বুধবার দীঘার পাইকারি বাজারে এসেছে প্রায় ৭০০ কেজি (৭ টন) রুপালি ইলিশ। তবে ছোট বড় মিলিয়ে চাহিদার তুলনায় পরিমাণে কম হলেও এই অভাবের বাজারের রসনার সাথে যে আপোষ করতে হবে না বাঙালির সে কথাই বলছে এই সদ্য আসা ইলিশের লট।
শেষ বর্ষায় এই দীঘার ইলিশে ভরসা করেই করনা আতঙ্কে নিমজ্জিত বাঙালি ঘরে ইলিশের গন্ধ রন্ধ্রে রন্ধ্রে রোমাঞ্চ ছড়াক এই আশাই বঙ্গজনের।