দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ১৭’ই আগস্ট সোমবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরার বিধায়ক সমরেশ দাস প্রয়াত হন। তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত পুরো এগরা বিধানসভা বাসী। তিনি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ছিলেন। সমরেশ বাবু কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। গত ১৮ জুলাই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছিল তাঁর। রাজ্যের দ্বিতীয় বিধায়ক হিসেবে করোনায় মৃত্যু হল সমরেশবাবুর। দলের প্রবীণ বিধায়কের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথমে মেচগ্রামের বড়মা কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সমরেশবাবুকে। সেখান থেকে তাঁকে আনা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাঁকে সল্টলেকের ওই বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এ দিন ভোর ৪.১৫ মিনিটে সেখানেই জীবনাবসান হয় তাঁর। তিন বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন সমরেশবাবু।
সোমবার বিকেলে তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে এগরার বালিঘাই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে এক শোকসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই সভায় উপস্থিত এগরা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্বরাজ খাঁড়া বলেন, “বিধায়ক সমরেশ দাসের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমরা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাই।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাজকুমার দুয়ারী, এগরা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ কুমার প্রধান, সহ- সভাপতি শ্রীপতি প্রধান, দলের মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী আরতি মুন্ডা, প্রকাশ রায়চৌধুরী, শ্রীমন্ত মান্না, মেগাঙ্ক শেখর গিরি, নির্মল পাত্র, আইজাদ হোসেন, মির্জা আজিজুর বেগ, স্বপ্না দাস ও জেলা পরিষদের সদস্য গায়ত্রী পাত্র প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, তিনি প্রবোধ সিনহা, প্রবোধ পান্ডা, কিরণময় নন্দ সহ আরও বামফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৯৪-৯৫ সালে বামফ্রন্টের সমবায় আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন। ২০০৯ সালে তৎকালীন এগরার বিধায়ক শিশির অধিকারী কাঁথির সাংসদ হওয়ার পর তাঁর উদ্যোগেই তৃণমূলে যোগদান করেন এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হন সমরেশবাবু। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা কেন্দ্র থেকে গত ১১ বছরে টানা ৩ বার বিধায়ক নির্বাচিত হন।
সমরেশ দাসের মৃত্যুতে ট্যুইটারে শোকজ্ঞাপন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিধায়ক শ্রী সমরেশ দাসের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর প্রয়াণে রাজনৈতিক জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল। তাঁর নিকটাত্মীয় ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাই।’
এগরা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি জয়ন্ত সাহু’র উদ্যোগে শহরে শোকসভার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি এগরা-১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় স্মরণ সভার আয়োজনও করা হয়েছিল। এ দিন এগরা-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিজন বিহারি সাউ ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় কুমার রাজ জানান, সমরেশবাবুর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতে শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমরা সমরেশ দাসের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।