দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে করোনা সংক্রমণ গোটা দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাতেও ব্যাপক হারে ছড়াচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মৃত্যুর ঘটনাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোজ। এহেন পরিস্থিতিতে গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মত রাজ্যে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিচ্ছে ‘স্ক্রাব টাইফাস’।
‘স্ক্রাব টাইফাস’ আসলে ঝোপঝাড়ে জন্মানো এক ধরনের মাকড়ের কামড় থেকে হয়। ইতিমধ্যে গত ৭২ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদে আক্রান্ত হয়েছেন ৭ জন। তাদের মধ্যে ৫ জনই শিশু। এর কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদেই ২ জন স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রত্যেকেরই চিকিৎসা চলছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে।
যদিও ‘স্ক্রাব টাইফাস’ এর আক্রমণ মুর্শিদাবাদে প্রথম নয়। গত বছরও মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জায়গায় থাবা বসিয়েছিল স্ক্রাব টাইফাস। ২ জনের মৃত্যুও হয়েছিল। কিন্তু এবার করোনার সংক্রমণের আতঙ্কের মধ্যে হানা দিল এই রোগ।
কী জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা, তাঁদের মতে, জলা যায়গায় ও ঝোপে ঝাড়ে জন্মানো এক ধরনের বিশেষ মাকড়ের কামড় থেকে স্ক্রাব টাইফাসের জীবাণু ঢোকে শরীরে। জীবাণু ঢোকার পরপরই আক্রান্তের জ্বর আসে। সেই জ্বরের তাপমাত্রা কখনও সখনও ১০৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। এই জীবাণুর সংক্রমণে প্রথম সপ্তাহ কেবল জ্বর, বমি ও শরীরে ব্যথা নিয়ে কাটে। চোখের পিছনের অংশেও হতে থাকে যন্ত্রণা। কিন্তু জটিল আকার ধারন করে দ্বিতীয় সপ্তাহে। শরীরে দেখা দেয় একাধিক জটিলতা। একে একে বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হতে থাকে। চিকিৎসকরা বলছেন, শুরুতে যদি চিকিৎসা না হয়, তাহলে আক্রান্তের মৃত্যু অনিবার্য।
শুধু জ্বর, গায়ে ব্যথা নয় শরীরে কোনও অংশে ছেঁকার মতো দাগ, ক্লান্তি ভাব, ঠোঁট লাল হয়ে যাওয়া, পা ফুলে যাওয়ার মতো একাধিক উপসর্গও দেখা দিতে থাকে এই রোগে। পরিস্থিতি এমনও পর্যায়ে যেতে পারে যে, রোগী কোমায় চলে যেতে পারেন।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, অ্যাকিউট এনসেফালোপ্যাথি সিনড্রোম থাকলেই স্ক্রাব টাইফাসের পরীক্ষা করতে হবে। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বর পাঁচ দিনের বেশি স্থায়ী হলেই টাইফয়েড ও ডেঙ্গির পরীক্ষার পাশাপাশি স্ক্রাব টাইফাসের পরীক্ষা করাতে হবে। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে জ্বর হলে তা স্ক্রাব টাইফাস নাও হতে পারে। তবে স্ক্রাব টাইফাসের কারণে হওয়া জ্বর আগে থেকে ঠেকানো সম্ভব না হলেও এই রোগের কিন্তু চিকিৎসা রয়েছে। ঠিকঠাক চিকিৎসা হলে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান।