দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনা মহামারীর কারণে তিন সপ্তাহের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আবার খুলতে চলেছে মহাপিঠের এক পিঠ তারাপীঠ মন্দির। সুত্র অনুযায়ী শনিবার মন্দির কমিটি এবং সেবায়েতদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামী সোমবার থেকে সমস্ত স্বাস্থ্য বিধি মেনে মন্দিরের দরজা দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
এই বিশেষ বৈঠক শেষে মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে নিজেই একথা জানিয়েছেন। উল্লেখ্য বীরভুমের তারাপীঠ সংলগ্ন এলাকায় করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত পয়লা আগস্ট থেকে তারাপীঠ মন্দিরের দরজা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ করা রয়েছে।
এই মন্দির খোলা প্রসঙ্গে তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই এলাকায় করোনা সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তাই সমস্ত নিয়মবিধি মেনে আমরা আগামী সোমবার থেকে মন্দির খুলছি। সংক্রমণ ঠেকাতে যা যা পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন সেগুলি নেওয়া হবে।’ তিনি জানিয়েছেন দর্শনার্থীদের আগের মতোই কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। এর পাশাপাশি তারাপীঠের হোটেলগুলিতে কী কী স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে, প্রশাসনের তরফে সেই সংক্রান্ত সবিস্তার নির্দেশিকা বহু আগেই প্রকাশিত।
এর আগে প্রথম লকডাউনে দীর্ঘসময় বন্ধ থাকার পরে গত রথযাত্রার দিন অর্থাত্ ২৩ শে জুন দর্শনার্থীদের জন্যে মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়েও দর্শনার্থীদের মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে একাধিক বিধিনিষেধ ছিল। মন্দির খোলার পর লোক সমাগমও ভালোই হচ্ছিল। কিন্তু পুনরায় মন্দিরের আশেপাশের এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় মন্দিরে আসা দর্শনার্থীদের শারিরীক ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে পুনরায় ১’লা আগস্ট থেকে আবার মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, ‘আগে তো মানুষের জীবন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়া হবে ভক্তদের জন্য।’


উল্লেখ্য গোটা রাজ্যের পাশাপাশি বীরভূম জেলাতেও কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গত ২০ শে অগস্ট এই জেলায় একদিনেই ৩৭ জনের শরীরে সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও তারাপীঠ মন্দিরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে জানা গিয়েছে। সে কারণেই আগামী ২৪ অগস্ট, সোমবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য তারাপীঠ মন্দিরের দরজা ফের খুলে দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে মন্দির খুললেও দর্শনার্থীদের আপাতত গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে মায়ের অবয়ব দর্শন করেই ফিরতে হবে। সেই সাথে সকল দর্শনার্থী ও সেবায়েতদের ফেস মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক। মন্দিরে প্রবেশের আগে প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা থার্মাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে। এই শারিরীক পরীক্ষার জন্য মন্দির চত্ত্বরে মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ শে জুন প্রথমবার মন্দির খোলার সময়ে মন্দিরের তিনটি গেটে স্যানিটাইজার ট্যানেল বসানো হয়েছিল। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে পুন্যার্থীদের দাঁড় করানো হচ্ছিল। শুধুমাত্র সেবায়েতরাই গর্ভমন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন। দর্শনার্থীদের হয়ে সেবায়েতরাই পুজো দিয়ে আসবেন। তবে দর্শনার্থীরা আগের মতো কোনো সিঁদুর, চরণামৃত পাবেন না। নাট মন্দির থেকে বিগ্রহ দর্শন করে ফিরতে হবে।