দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গতকাল নবান্ন সভাগৃহে সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী এক গুচ্ছ নতুন প্রকল্প ঘোষণা করেন। শুধু কর্ম সংস্থান নয় এই করোনা আবহে যে বিনিয়োগও হচ্ছে বড় মাপের সে কথাও উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে।
বুধবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোড়া সুখবর দেন। এক, নতুন বন্দর তৈরি করছে রাজ্য। যা দিঘার অদূরে তাজপুরে তৈরি করা হবে। এই বন্দর তৈরি হলে কর্মসংস্থান বাড়বেই এমনটাই দাবি রাজ্যসরকারের। দুই, রাজ্যের প্রথম কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন ও স্টেট ব্রডব্যান্ড পলিসি তৈরি হচ্ছে। আর এই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে দিঘাতে। আর এই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরিতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করছে রিলায়েন্স জিও। এই কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন তৈরি হলে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা অনেকটাই স্থিতিশীল ও দ্রুতগামী হবে। যার ফলে অনলাইন যোগাযোগ ও আই টি শিল্পে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে। সেই সাথে অনলাইন যেকোনো কাজের গতিও বৃদ্ধি পাবে।
করোনা মহামারী আবহে রাজ্যে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটাই স্থবির। এমন কঠিন সময়ে এই জোড়া সুখবরে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারবে বঙ্গবাসী এমনটাই আশা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
যদিও বন্দর তৈরি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগীতার কথা উঠলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকদিন ধরে আমরা তাজপুরে নতুন বন্দর তৈরি গড়ার চেষ্টা করছি। কেন্দ্র যৌথভাবে বন্দর তৈরিতে প্রতিশ্রুতি দিলেও অর্থনৈতিকভাবে কোনো রকম সহায়তা করছে না তাই রাজ্য সরকার ঠিক করেছে এই বন্দর পশ্চিমবঙ্গ সরকারই তৈরি করবে।
তাজপুরে যে বন্দরটি হবে যেহেতু তা একার দ্বারা তৈরি সম্ভব নয়, তাই প্রয়োজনীয় টেন্ডারও ডাকা হবে। বন্দর প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় অন্যান্য বঞ্চনার কথাও তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘তাজপুরে বন্দর তৈরি্র জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদনও জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা কোনও আগ্রহ দেখায়নি। গঙ্গাসাগরে লোহার সেতু করে দেওয়ার কথা বললে তাও করেনি।’ তাজপুরে বন্দর তৈরি হলে যে তা রাজ্যের উন্নয়নের মুকুটে একটা বড় পালক যোগ করবে সে বিষয়টি উল্লেখ করতেও ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। বন্দর তৈরি হলে কর্মসংস্থান এর পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আঞ্চলিক ও রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতিও হবে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
দিঘায় কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন হলে সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক নিয়ে কাজ হবে। মোবাইলের যন্ত্রাংশও তৈরি করা হবে। সে ক্ষেত্রেও বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই অর্থনৈতিক মন্দার দিনে এই লগ্নি ও উন্নয়নের খবর যে বাংলার শিল্পকে অনেকটাই চাঙ্গা করবে, তা বলাই বাহুল্য।