দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বিরল অস্ত্রোপচারের সাক্ষী বারাসাত সদর হাসপাতাল। অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ও সরকারী সাহায্যে জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সুস্থ হলেন এক সেলাই মিস্ত্রি।
উত্তর চব্বিশ পরগনার দত্তপুকুরের শিবালয়-য়ের বাসিন্দা সমীর চক্রবর্তী। পেশায় সেলাই মিস্ত্রি। সংসারের রয়েছে একমাত্র ছেলে ও বৌ। অত্যন্ত গরিব পরিবারের সমির বাবু সেলাইয়ের কাজ করে সাইকেল নিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে তা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। এইরকম ই একদিন সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে বাঁদিকের পায়ে গুরুতর আঘাত লেগে বারাসাত হাসপাতালে ভর্তি হন।
বারাসাত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সমীর বাবুর অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কথা জানতে পেরে গুরুত্ব নিয়ে তড়িঘড়ি মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। চিকিৎসা শুরুতেই তাদের নজরে আসে সমীরের বাঁদিকের পায়ের হাড়ের অবস্থা ভীষণ আশঙ্কাজনক। এর ওপর রিপোর্টে ধরা পড়ে কিছুদিন আগেই মাইনর হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তার। এমত অবস্থায় হাসপাতালের থাকা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামে অস্ত্রোপচার করতে চিকিৎসকরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন।
ডাক্তাররা বুঝতে পারেন রোগীর হিপ রিপ্লেসমেন্ট না করলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা মুশকিল। একদিকে করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা হাসপাতালগুলিতে যেমন চিকিৎসা করা দুষ্কর হয়ে পড়েছিল, তার ওপর পরিবারের সামর্থও ছিলনা।
অগত্যা বারাসাত হাসপাতালের চিকিৎসকরা সমীর বাবুকে সুস্থ করতে তৎপর হয়ে ওঠেন এবং সম্পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় কয়েক লক্ষ টাকার সরঞ্জাম ব্যবহার করে এ মাসের ২০ তারিখ সমীর বাবুর অস্ত্রোপচার করেন।
এখন সমীর বাবু সম্পুর্ণ সুস্থ। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন বারাসাত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানালেন, সমীর বাবুর অস্ত্রোপচার করতে তাদের বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। চারজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে সমীর বাবুর অস্ত্রপচার সফল হয়েছে। এখন তাকে জেনারেল বেডে দেওয়া হয়েছে এবং আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে ছুটিও দিয়ে দেওয়া হবে।
করোনা আবহে দরিদ্র অসহায় সমীর বাবুর পরিবারের পক্ষে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে এত বড় অস্ত্রোপচার সম্ভব ছিল না। বারাসাত হাসপাতালে এই বৃহৎ সহযোগিতায় খুশি তিনি ও তার পরিবার। এ ধরণের অস্ত্রোপচার জেলা হাসপাতালে বিরল এবং এই কর্মকান্ডের সফল রূপায়ণ হওয়ায় চিকিৎসকরাও যারপরনাই খুশি।