দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শুক্রবার দুপুরে একদিকে যখন রেলের কর্তারা বৈঠকে জানাচ্ছেন যে নিয়ন্ত্রিতভাবে রাজ্যে মেট্রো ও লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার বিষয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনো অনুরোধ আসেনি, সেই সময়েই অন্যদিকে রাতের বেলায় নবান্ন থেকে অনুরোধের চিঠি পাঠানো হলো রেলওয়ে বোর্ডকে। এই চিঠিতে লোকাল ট্রেন ও মেট্রো রেলের যাত্রীদের মধ্যে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায় সেদিকেও বিশেষ নজর দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার রাতেই রাজ্য সরকারের মতামত এবং অবস্থান জানিয়ে রেল বোর্ডে এই চিঠি পাঠান।
উল্লেখ্য, বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাংলায় লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা ধাপে ধাপে শুরু করা হলে রাজ্য সরকারের তাতে কোনো আপত্তি নেই। এর পাশাপাশি গত ৬’ই জুলাইয়ে করোনা সংক্রমণের ভয়ে যে ৬টি শহরে বিমান যাওয়া-আসার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটাও মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে তুলে নেওয়া হয়েছে। মমতা ব্যানার্জী জানান, ১ লা সেপ্টেম্বর থেকেই সপ্তাহে তিন দিন দিল্লি, মুম্বাই, পুনে, নাগপুর, চেন্নাই এবং সুরাট থেকে কলকাতায় বিমান যাওয়া-আসা করবে।


প্রসঙ্গত, আগামী ৩১’শে আগস্ট পর্যন্ত আনলক থ্রির পরিধি। ১’লা সেপ্টেম্বর থেকে আনলক ৪ এ প্রবেশ করবে দেশ। সে জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের নতুন গাইডলাইন তৈরির কাজ প্রায় চূড়ান্ত। সূত্রের খবর, আনলক ৪ এ সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে ফের মেট্রো চালুর অনুমতি দেওয়া হতে পারে। গত মার্চের শেষ দিক থেকে দেশজুড়ে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ আছে। খুব শিগগির নতুন আনলক গাইডলাইন প্রকাশ করবে কেন্দ্রীয় সরকার যাতে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করেই ১’লা সেপ্টেম্বর থেকেই গণ পরিবহন সহ আরও বেশ কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ছাড় দেওয়া যায়। সূত্রের খবর, এখনই স্কুল-কলেজ খুলছে না।
নতুন গাইড লাইনে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) স্পষ্ট দেওয়া আছে যে কী কী নিয়ম মেনে আনলক-৪ কে সফল করতে হবে। সেই ‘SOP’ তৈরির কাজ প্রায় চূড়ান্ত। সূত্রের খবর, বিশেষ করে লোকাল ট্রেনে ও মেট্রোতে চড়ার জন্যে টিকিট কেটে স্টেশনে ঢোকা বাধ্যতা মূলক। টিকিট ছাড়া স্টেশনে থাক যাবে না। এছাড়া স্টেশনে প্রবেশের আগে প্রত্যেক যাত্রীকে থার্মাল ডিটেক্টর দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করে নেওয়া হবে। কোনও ব্যক্তির শরীরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি তাপমাত্রা ধরে পড়লে তাঁকে ট্রেনে ওঠার ছাড়পত্র দেওয়া হবে না। এর পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম এবং মেট্রোর কামরায় ৬ ফুট দূরত্বের সামাজিক বিধি মেনে বসতে বা দাঁড়াতে হবে। সূত্রের খবর কেন্দ্রের তরফে প্রতি কামরায় সর্বোচ্চ ৫০ জনের যাত্রী সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হতে পারে। তবে বাংলার লোকাল ট্রেন ও মেট্রোতে যে পরিমাণ মানুষ যাতায়াত করেন সেখানে মাত্র পঞ্চাশ জন যাত্রী এক কামরায় কতটা যুক্তিযুক্ত সে নিয়ে বিতর্কের যথেষ্ট সুযোগ থেকেই যাচ্ছে।