দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে ছ’টা নাগাদ ২ নম্বর জাতীয় সড়কে দাদপুর থানার হোদলা ব্রিজের কাছে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল রাজ্য পুলিশের কম্যান্ডিং অফিসার দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও দু’জনের। দেবশ্রী বেহালার বাসিন্দা হলেও এখন শিলিগড়ির ডাবগ্রামে পোস্টেড ছিলেন। একই সাথে মৃত্যু হয়েছে তাঁর গাড়ির চালক মনোজ সাহার ও নিরাপত্তারক্ষী তাপস বর্মণের।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে আজ শুক্রবার ভোরে দেবশ্রীর (৪৬) স্করপিও গাড়িটি দাদপুর থানার হোদলা ব্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ১২ চাকার একটি বালির লরির পিছনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, সম্ভ বত গাড়ির চালককের ঘুমিয়ে পড়ার কারণেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনার ঘাট এতটাই প্রবল ছিল যে ঘটনাস্থলেই গাড়িটি দুমড়মুচড়ে যায়। ওই এলাকায় টহল দেওয়া পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়াররা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। রাজ্য পুলিশের অন্যতম দক্ষ পুলিশ আধিকারিক দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায়ের এমন আকস্মিক ও মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুলিশ মহলে।
দাদপুর থানার পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের তত্পরতায় দুর্ঘটনার অব্যহিত পরে গুরুতর জখম তিন জনকেই চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিংসকরা। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের এসপি তথাগত বসু ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে পৌঁছন। খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে পৌঁছন দেবশ্রীর স্বামী সলিল রায় এবং ১৮ বছরের ছেলে অধীপ রায়ও। এই মূহুর্তে দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে শিলিগুড়ির ডাবগ্রাম থেকে বেহালার পর্ণশ্রীতে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন দেবশ্রী। দুর্ঘটনার অভিঘাতে বোঝা যাচ্ছে সেই সময়ে গাড়ির গতি অনেকটাই বেশি ছিল। তবে নিয়ন্ত্রনহীন গাড়ি চালনা না ক্লান্তিতে চালকের চোখ লেগে জওয়ায়র কারণে এই দুর্ঘটন সেটাই তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত: দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায় কলকাতা পুলিশের প্রথম মহিলা ওসি ছিলেন। ২০১০ সালে নর্থ পোর্ট থানায় ওসি হিসেব নিযুক্ত হন তিনি। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর কলকাতা থেকে জেলায় ডেপুটেশনে পাঠানো অফিসারদের তালিকায় তিনি অন্যতম। কলকাতা পুলিশের ওসি হওয়ার আগে লালবাজারের ডিটেক্টিভ ডিপার্টমেন্টের ট্র্যাফিকিং উইং-এর ইনচার্জ ছিলেন তিনি। তার আগে সাব ইনস্পেক্টর ছিলেন ইকবালপুর থানায়।দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায় তাঁর কেরিয়ারে একজন দাপুটে, দক্ষ, সৎ অফিসার হিসেবে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি বর্তমানে ডাবগ্রামের ১২ নং ব্যাটেলিয়নের কম্যান্ডিং অফিসার ছিলেন ।