দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: “জলে ভাজা সিঙ্গারা” হ্যাঁ,হকার ভাইদের আদুরে নাম যে ফলের তাকে আমরা অধিকাংশই চিনি ‘পানিফল’ নামে ! ভারত জুড়ে চাইনিজ দ্রব্য বয়কটের ঝড় উঠলেও এই চীনা ফলের চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


ধারণা করা হয় আজ থেকে প্রায় ৩ হাজার বছর আগেই চীন দেশে পানি ফলের চাষ শুরু হয়। ভারত,বাংলাদেশ,জাপান শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, আফ্রিকা’র বিভিন্ন দেশেও এই ফলের চাষ ও চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সাধারণত: স্থির বা আবদ্ধ স্রোতবিহীন জলাশয়ে এই ফলের চাষ হওয়ার কারণে চাষী ও বিক্রেতা ভাইদের পছন্দের নাম ‘জলে ভাজা সিঙ্গারা’ !
এই ফল কাঁচা বা সেদ্ধ করে তরকারি প্রস্তুত করেও খাওয়া যায়। এমনকি শুকিয়ে আটা তৈরি করে তা দিয়ে বানানো রুটি পিঠে কেক বিস্কুট হিসাবে চীনদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং আবশ্যকীয় খাদ্য তালিকার মধ্যে পড়ে।
এই পানিফলে রয়েছে ৯০%কার্বোহাইড্রেট , ৬০% শর্করা। এই খাদ্যগুণ ছাড়াও এতে রাইবোফ্লাভিন ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ক্যালসিয়াম সহ বিভিন্ন খনিজ ও ভিটামিন অন্তর্নিহিত থাকায় শরীরের জন্যে এই ফল বিশেষ উপকারী।
শুধু খাদ্যগুণ নয় বিভিন্ন রোগ যেমন এলার্জি, হাত পা ফোলা, উদারাময়, তলপেটে ব্যথা’র মতো অনেক রকম রোগ নিরাময়ের ঔষধি গুণও আছে এই ফলে। সাধরণত: আষাঢ় মাস থেকে ভাদ্র-আশ্বিন মাস পর্যন্ত লাগানো বর্ষজীবী চারাগাছ ফল দেয় ফাল্গুন মাস পর্যন্ত। ৬০ থেকে ৬৫ দিনের পর নীল বা হালকা বেগুনি সাদা অসাধারণ দেখতে ৪ পাপড়ি যুক্ত উভয়লিঙ্গ ফুল হয়। ফুল আসার পনেরো থেকে কুড়ি দিনের মধ্যে ফল তোলার মতো পরিপক্ক হয়।


প্রাথমিকভাবে লাল পরবর্তীতে সবুজ এবং পরিপক্ক হলে এই ফল কালো রং ধারণ করে। জলাশয়ের জল পরিশোধন করার অদ্ভুত ক্ষমতা থাকায় মাছ চাষের জলাশয়ে এই ফল গাছের চাষ করলে মৎস্যচাষীরা উপকৃত হন। এই ফলের ফলন ও বেশ অনেকটা। প্রতি বিঘায় দুই মেট্রিকটন ফলন পাওয়া যায় যার বাজারদর ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাক।
পশ্চিমবাংলার নদীয়ার কালীনারায়নপুর, শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, করিমপুর, সহ বেশ কিছু জায়গায় সারা বছর মূলত: পানিফল চাষ করেন এমন কৃষকের সংখ্যাও কম নয়। তবে বেশিরভাগ ভূমিহীন কৃষক অন্যের জমি লিজ নিয়ে এধরনের চাষ করে থাকেন,কিন্তু উপযুক্ত প্রশিক্ষণ বা বীজ, সার, ও ওষুধের যোগান না থাকায় সেভাবে লাভের মুখ দেখতে পান না অনেকেই।