দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাজ্যের বনাঞ্চলগুলোতে বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের বন গুলিতে মানুষের অবৈধ আগ্রাসন ফের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলো পশ্চিমবঙ্গের বন্যপ্রাণের ভবিষ্যৎ। এবার অভিযোগ এলো, কার্শিয়াং বন বিভাগের অন্তর্গত বামনপোখরি থেকে। সেখানে বনাঞ্চলের অন্তর্গত বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে বর্জ্য স্তূপ করা হচ্ছে। আর খিদের তাড়নায় সেগুলিই খেয়ে সাফ করছে বুনো হাতির দল। এই ঘটনা তখনই নজরে আসে যখন হাতির মলে পাওয়া যায় ক্ষতিকারক সেই সব বর্জ্য পদার্থের অপাচ্য অংশবিশেষ।
উল্লেখ্য, কার্শিয়াং এর বামনপোখরির এক এলাকায় হাতির বিষ্ঠায় প্লাস্টিক দেখতে পায় টহলদারী বন্যপ্রাণ কর্মীদের একটি দল। বন দফতরের কর্মীদের সঙ্গে নিয়েই তাঁরা এই এলাকায় যৌথ পরিদর্শন করার সময় সেখানে কিছু বর্জ্য ফেলার জায়গা খুঁজে পান তাঁরা। যা অবৈধ নন–বায়োডেগ্রেডেবল বস্তুর স্তূপে পরিপূর্ণ। এই ধরণের বজ্য বনাঞ্চলের সীমার মধ্যে ফেলা হয়েছে যা ক্রমে পশুপাখিদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ক্রমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে অপর পক্ষে এই ধরণের বজ্য প্রাকৃতিক পরিবেশেরও পরিপন্থি।
সূত্রে র খবর, এক বন্যপ্রাণ কর্মী’র মতে ‘কার্শিয়াং বন বিভাগের অন্তর্গত বামনপোখরির এই এলাকায় বহু দিন ধরে অবৈধভাবে বর্জ্য–নোংরা ফেলা হচ্ছে। মূলত : আশপাশের লোকালয় থেকেই এইসব নোংরা নিয়ে আসা হচ্ছে। ওটা এলিফ্যান্ট জোন। প্রায়শ:ই ওখান থেকে অনেক হাতি যাতায়াত করে। এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তণ ও বনাঞ্চলের পরিধি কমতে থাকায় জঙ্গলে খাবারের অভাব রয়েছে। তাই খিদের জ্বালায় কখনও কখনও ওই বর্জ্য খেয়ে ফেলেছে তারা। আর এ কারণেই হাতির গোবর থেকে প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে।’ তিনি এও বলেন যে রাজ্য স্তরে পৌরসভা যদি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে তাহলে অবৈধভাবে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে তাঁরা এই সব হাতির বিষ্ঠা’র নমুনাগুলি ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া–য় পাঠাবে।
এই বজ্য প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির ঐরাবত ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে চালানো একটি অভিযানে বামনপোখরির জনবহুল এলাকা থেকে গোবরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার সেগুলো তাঁরা ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া–কে পাঠাবে, যাতে আইনি উপায়েই ওই বন্য এলাকায় অবৈধভাবে বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কোনো বাধা সম্মুখীন হতে না হয়।
ওই সংস্থারই আর এক সদস্য বলেন, ‘ আমরা প্রায়শই দেখছি, হাতিরা ক্ষতিকারক প্লাস্টিক খেয়ে ফেলছে। এতে হাতিদের জীবন সংশয় হতে পারে। তাই আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। এবং ভবিষ্যতেও এই বন্য এলাকা সংরক্ষণে যা যা করার প্রয়োজন তা করতে পিছপা হবো না।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের বন গুলিতে চোরা শিকারির দৌরাত্ম্য, মানুষের আগ্রাসন ও বন্যপ্রাণের প্রতি ক্ষোভ ক্রমশঃই জঙ্গলের বাস্তুতন্ত্র কে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। এর আগেও ইলেকট্রিক শক আর বিষ খাইয়ে বন্যপ্রাণ মেরে ফেলার প্রচুর নিদর্শন রয়েছে এই সব অঞ্চলে।