দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: সমাজের তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের বলয় ভেঙে, সামাজিক ভারসাম্যকে ফিরিয়ে এনে মানবিকতা প্রতিষ্ঠার এ যেন এক অন্য নজির স্থাপন হল গত শনিবার। যাদের সিংহভাগ কে আমরা দেখতে পাই রাস্তার ট্রাফিক জ্যামে, বাসের ভিড়ে কিংবা ট্রেনের কামরায়, যাদের পরিচয় সদ্যজাতকে কোলে নিয়ে ঢোলবাদ্য বাজিয়ে খেমটা নাচের গমকে, সেই তৃতীয় লিঙ্গ’র উত্থান মানুষ হিসেবে। গত শনিবার সিভিল কোর্টের বিচারপতির পদে নিযুক্ত হলেন তৃতীয়লিঙ্গ শ্রেনী সম্প্রদায়ের তিন কর্মী যথা- রাজকুমার দাস, রাজীব দাস, এবং ডিস্ট্রিক্ট লিগাল সার্ভিসেস অথোরিটির (ডিএলএসএ) সাথে যুক্ত প্রদীপ ঘোষ।


ডিএলএসএ সূত্রে খবর লোকনাথ ভট্টাচার্য নামে আরও এক এই শ্রেণীভুক্ত ব্যাক্তির বিচারপতির পদে যোগ দেবার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি তার সিদ্ধান্ত বদল করেন। শুধুমাত্র লিঙ্গ বৈষম্যর মাপকাঠি কোনো মানুষের প্রতিভা, তার সাম্যের অধিকারের পথে বাধা হতে পারে না, এ বিষয়কে শীর্ষে রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা সিটি সিভিল কোর্ট।
উল্লেখ্য, এই দিনের অনুষ্ঠানের শুরু হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি. বি. এন. রাধাকৃষ্ণণ’ এর হাত ধরে। এছাড়াও এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায় ও বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়ের মতোন গন্যমান্য ব্যক্তিত্বরা। মূলত: বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশই বর্তমানে তৃতীয় লিঙ্গ অন্তভুক্ত মানুষদের সাম্যের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরব হয়েছে। সেখানে কলকাতা সিভিল কোর্টের এমন সিদ্ধান্ত, সমাজে এই শ্রেনীর মানুষদের অবস্থান যে অনেকটাই স্পষ্ট করবে তা নিয়ে আশাবাদী অনেকেই।
উল্লেখ্য, সর্বপ্রথম তৃতীয় লিঙ্গের বিচারক হিসেবে এর আগে জয়ীতা মণ্ডল কলকাতার লোক আদালতে নিযুক্ত হয়েছেন ২০১৭ সালে। তিনি ইসলামপুরে’র লোক আদালতে নিযুক্ত। এই ঘটনার প্রায় ৩ বছর পর, আবার ইতিহাসের পাতায় সেই কলকাতা।