দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:মুখ্যমন্ত্রী’র উত্তরবঙ্গ সফর যে শুধু কুশল বিনিময় নয় বরং কৌশল বিনিময়ের সে বিষয়ে বিরোধীরা আগেই আগাম আভাস দিয়েছিলেন, আর তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করলেন মমতা ব্যানার্জী। উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিকদের জন্য আবাস প্রকল্পের সূচনা করলেন আজ। এবারের বিধানসভা নির্বাচন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর উত্তরের দিকে এটা যে একটা মস্ত ক্রিকেটিয় ফ্লিক সেটা যে কেউ’ই ঠাহর করতে পারবেন। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে ‘চা সুন্দরি’ নামে প্রকাশিত এই প্রকল্পে গৃহহীন চা শ্রমিকদের বাড়ি করে দেবে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, গরীব চা শ্রমিকদের আবাস প্রকল্প‘চা সুন্দরি’র জন্য ইতিমধ্যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। এই কাজ আগামী ২ মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের ৩৭০টি চা-বাগানের প্রায় ৩ লক্ষ চা শ্রমিক রয়েছে। তার মধ্যে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের ৭টি চা বাগানের ৩,৬৯৮জন শ্রমিক সর্বপ্রথম এই সুবিধা পাবেন।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা ভালো যে চা বাগানের জমি বেসরকারী মালিকানাধীন। মালিকের অনুমতিক্রমে শ্রমিকরা সেখানে কলোনি বানিয়ে থাকেন মাত্র। সেক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে সাধারণ আবাস যোজনায় চা শ্রমিকদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই চা বাগানের শ্রমিককে সেই জমিতে বাড়ি বানিয়ে দিলে তার আইনি মালিক কে হবেন তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।


শুধু চা-শ্রমিক নয়, এদিন দক্ষিণবঙ্গের মতো উত্তরবঙ্গেও পুরোহিত ভাতা প্রকল্পেরও সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন জলপাইগুড়ির জল্পেশ মন্দিরের পুরোহিতের হাতে ভাতার চেক তুলে দিয়ে। সেই সাথে মমতা ব্যানার্জী এও জানান যে, রাজ্যে মোট ১৮,৩১১টি মন্দিরের পুরোহিতদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরও ১৮,২২৩ জন পুরোহিতও ভাতা পাবেন। পুরোহিতদের তিনি জানান এই মাসিক ১০০০ টাকা ভাতার পাশাপাশি বাড়ি করার জন্য রাজ্য সরকার দেবে ১.২০ লক্ষ টাকা।
আজ মমতা ব্যানার্জির এই প্রতিশ্রুতি দেখে বিশেষজ্ঞ তথা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল উত্তরবঙ্গ থেকে ধুয়েমুছে সাফ হয়েছে। পাহাড় থেকে গৌড়বঙ্গে (মালদা) ফুটেছে পদ্মফুল। তাই নিজেকে আবার সিংহাসনে দেখতে গেলে ‘ঘুর পথে’ অর্থ বিলনো ছাড়া অন্য কোন উপায় দেখেছেন না তিনি। এমন কী প্রশান্ত কিশোরের একের পর এক প্রজেক্ট ফেল এটাই বুঝিয়ে দেয়, এই সোসাল মিডিয়ার যুগে মানুষ কে বোকা বানানো এতটা সহজ নয়। তাই এখনো তিনি সেই আদি কালে’র পাইয়ে দেওয়া নীতিকেই ধরে নিয়ে ভোটের পথে এগোচ্ছেন।