দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাস্তার হাল ফেরাতে এবার মুখ্যমন্ত্রীর নতুন সংযোজন ‘পথশ্রী’ প্রকল্প। বর্ষায় রাস্তা ঘাটের হাল যেন চোখেই দেখা যাচ্ছে না। দু-ধার ভাঙা রাস্তা। পিচ খুবলে উঠে গিয়েছে। রাস্তার মাঝে গর্তের সৃষ্টি হয়ে তাতে জল জমেছে। রাস্তা সংস্করণের কাজ শেষ কবে হয়েছে তা বলা মুশকিল। আর এই সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে এমন বহু গ্রামীণ রাস্তা। এই সংস্কারহীন রাস্তার হাল ফেরাতে বৃহস্পতিবার এক নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের নাম ‘পথশ্রী’।
সম্ভবত রাস্তার এই কঙ্কালসার দশা-র উন্নতি সাধনের জন্যই তার এই উদ্যোগ। এই গোটা বিষয়টি তিনি তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে টুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তিনি আরোও জানিয়েছেন, ‘পথশ্রীর’ আওতায় মেরামতির জন্য মোট ৭ হাজার রাস্তাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আনুমানিক ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হবে এই প্রকল্পের আওতাতে।
মূলত: রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা কঙ্কালসার রাস্তাগুলিকে এই প্রকল্পের আয়ত্তায় এনে মেরামতির উদ্যোগ এই প্রথম চালু হলো। অন্যান্য জেলার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদেও বৃহস্পতিবার থেকে এই প্রকল্পের সূচনা হলো প্রতিটি ব্লকে ব্লকে।রাস্তা সংক্রান্ত যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় জানতে চালানো হয়েছিল একটি সমীক্ষা। আর এই সমীক্ষার ফল স্বরূপ যেসকল রাস্তার পুনর্নিমাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন, ইতিমধ্যেই ওই সংখ্যক রাস্তার একটি নির্দিষ্ট তালিকা তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও এসেছিল। আর সেখান থেকেই জানা যাচ্ছে, জেলা পরিষদের আওতায় থাকা আরও রাস্তা ওই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে। মূলত ১- ১৫ই অক্টোবরের মধ্যে প্রতিটি ধাপে ধাপে এই রাস্তার সংস্কারণের কাজ শুরু হবে। শুধু তাই নয়, কবে, কোনদিন, কোন কোন রাস্তার কাজ শুরু হবে তাও ইতিমধ্যে ঠিক করা হয়েছে। যেমন করে, বৃহস্পতিবার যেমন বেশ কিছু রাস্তা মেরামতির কাজের শুভারম্ভ হলো।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ি থেকে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সূচনার কথা মুখ্যমন্ত্রী যেমন টুইটারে জানিয়েছেন, তেমনই নবান্নের তরফ থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই প্রকল্পের বিষয়ে বিশদে জানানো হয়েছে। রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে রাস্তা সংক্রান্ত যে সব অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছিল, তারই ভিত্তিতেই মেরামতির এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। মূলত রাস্তা সংক্রান্ত সব প্রকল্পকে এক ছাতার তলায় এনেই ‘পথশ্রী’ অভিযান নামক এই নতুন প্রকল্প শুরু করতে চলেছেন রাজ্য সরকার।
রাস্তার পুনর্নিমাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কারের কাজে গতি আনতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রকল্পের ভাবনা। এ বার থেকে নতুন তৈরি হওয়া বা সংস্কার হওয়া রাস্তায় এই প্রকল্পের নামে বোর্ড বসানো হবে। যেখানে প্রকল্প তৈরির কত খরচ সহ বিভিন্ন খুঁটিনাটির এটি তালিকা উল্লিখিত করা থাকবে। ‘দিদিকে বলো’ প্রকল্পের মাধ্যমে নাগরিকদের অভাব-অভিযোগ জেনে নেওয়ার চেষ্টা গত বছর থেকেই শুরু হয়েছিল। সিএমও-র (মুখ্যমন্ত্রীর দফতর) তরফেও একটি ‘গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেল’ (অভিযোগ প্রতিবিধান বিভাগ) খুলে রাজ্যবাসীর অভাব-অভিযোগ জেনে নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল।