দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বাংলার বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কমবেশী সব ঐতিহাসিক রাজবাড়িগুলিই দেবী আরাধনার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। প্রত্যেক রাজবাড়িরই নিজস্ব কিছু পরম্পর থাকে।যা পালনে পঞ্চমি থেকে দশমী পূজোর এই পাঁচটি দিন, ব্রতী হন রাজবাড়ি সদস্যরা।এমনই এক আশ্চর্য রীতির সাক্ষ তিনশো বছর ধরে বহন করে চলেছে পূর্ব বর্ধমানের বদ্যিপুরের নন্দীবাড়ি রাজবাড়ি।
বলি,ভোগ,নীলকণ্ঠ পাখির সাবেকিয়ানার পাশাপাশি এই রাজবাড়িতে দশমীতে আজও দেখানো হয় সাপের খেলা। কথিত আছে, বদ্যিপুরের বাসিন্দা শিশুরাম নন্দী, দুই চব্বিশ পরগনা, নদীয়া, এবং হুগলিতে জমিদারি পাবার পর,এই বিশাল রাজবাড়ির নির্মান করেছিলেন। জমিদার বাড়ির গৃহদেবতা স্বরূপ শালগ্রাম শিলাও প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এর পাশাপাশি গৃহসংলগ্নে তৈরী করা হয় রাজরাজেশ্বরের মন্দির এবং দুর্গাদালানও। সেই থেকেই এই বংশে শুরু হয় দুর্গাপুজো।


আর এরপরই ঘটে এক অলৌকিক ঘটনা, পূজো শুরু হলেও রুষ্ট হন দেবী মনসা। স্বপ্নে দর্শন দেন জমিদারকে। সেই থেকে দুর্গার পাশাপাশি মা মনসারও পূজো পেয়ে আসছেন এই রাজবাড়িতে। যার স্বরূপ আজও দশমীতে দুর্গাদালানে হয় সাপ খেলা। সাপুরের বিণেতে ঝাঁপি থেকে বেরিয়ে আসে শঙ্খচূড়, গোখরো, শাঁখামুটির মতো বিষাক্ত সব সাপ। তাদের দেখতে ভীড়ও জমে রাজবাড়ির দালানে।


তবে বর্তমানে কালের দৌলতে সে জৌলস কিছুটা ম্লান হয়েছে। সাপ খেলা শেষে নীলকন্ঠ পাখির দেখা মিললে তবেই নন্দীবাড়িতে শুরু হয় দেবীর ভাসানের প্রস্তুতি। আবারও শুরু হয় একটা বছরের অপেক্ষা, আসছে বছর আবার হবের আশায়।