দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আমফান সুপার সাইক্লোনে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গর গ্রাম থেকে শহর। এমনকি তিলোত্তমা কোলকাতাও অন্ধকারে মুখ ঢেকেছিল প্রায় ১১ দিন। ক্ষয়ক্ষতি’র হিসেব নিকেশ দেনা পাওনার চক্কর চলছে এখনোও। কিন্তু এরই মধ্যে হওয়া অফিস শোনাল অশনি সংকেতের সুর। এবার বাংলাতে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘুর্নীঝড় ‘গতি’। তাও অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে অর্থাত্ দুর্গাপুজোর সময়ে।
হাওয়া অফিসের মতে এবারে ভেস্তে যেতে পারে দুর্গাপুজো। যদিও এই ঝড় আছড়ে পড়ার কথা ওপার বাংলায়। তবুও এই বাংলা বিশেষ করে কলকাতায় এর প্রভাব থাকবে। আবহাওয়া বিভাগের সূত্রে এর আগেই জানানো হয়েছিল যে, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে একটি বা দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। তারই মধ্যে একটি নিম্নচাপ ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
আর অবহাওয়াবিদদের সেই পূর্বাভাসকে সত্যি করে গত ৩০’শে সেপ্টেম্বর উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন অঞ্চল এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। আর আগামি ১০-১২ দিনের মধ্যে তা ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় পরিণত হতে পারে এবং অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘গতি’। এবারে তার নামকরণ করেছে ভারত।
যদিও ইতিহাস বলছে অক্টোবর-নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে একাধিক নিম্নচাপ তৈরি হয়। কোনও কোনও নিম্নচাপ আবার ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। আর বাংলাদেশে যা ‘আশ্বিন-কার্তিকের তুফান’ হিসেবে পরিচিত। তবে এবারে পুজো পিছিয়ে যাওয়াতে দুই বাংলারই দূর্গাপূজা এই ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে।
এদিকে দিল্লির মৌসম বিভাগেরতরফে জানানো হয়েছে, অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহেই বাংলা থেকে বিদায় নেবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। এবার ওই দেশেরও বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টির ভালোমতো তারতম্য হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে যেখানে স্বাভাবিকের থেকে ২৪.৬ শতাংশ বেশি বর্ষণ হয়েছে, সেখানে ঢাকায় স্বাভাবিকের থেকে ১৯.৪ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। যাবতীয় প্রত্যাশা ছাপিয়ে রংপুরে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের থেকে ১৩৩ শতাংশ বেশি – ৯৭২ মিলিমিটার। বিশেষত সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ছ’দিন সেখানে প্রবল বৃষ্টিপাত (২৬৭ মিলিমিটার) হয়েছিল। সার্বিকভাবে বাংলাদেশে স্বাভাবিকের থেকে ৩৩.১ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবরেও স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
‘গতি’র তীব্রগতির ধাক্কা কলকাতা অনুভব না করলেও তার ঝাঁজ প্রভাব ফেলবে আবহাওয়াতে। ঝির ঝির থেকে অতিভারি বৃষ্টি সেই সাথে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে, যা খুব স্বাভাবিকভাবেই বাঙালীর মনখারাপের মূল কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।