দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ শনিবার পরিষ্কার করে জানিয়েছে যে গত ৮ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যালয়ে (নবান্ন) বিজেপির মিছিলের সময় ওই শিখ ব্যাক্তির পাগরী “স্বয়ংক্রিয়ভাবে” এবং “কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই” পড়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় কোনো পুলিশ কর্মীরা যুক্ত নেই এবং এতে আরো বলা হয়েছে, গ্রেফতারের আগে সেই শিখ ব্যক্তিকে “বিশেষভাবে” পাগড়ি পরতে বলা হয়েছিল।
বিজেপি নেতা প্রিয়াংশু পাণ্ডের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী হলেন বলবিন্দর সিং (৪৬)। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নাবান্নয় গেরুয়া পার্টির সমাবেশ চলাকালীন বন্দুক বহনের অভিযোগে বলবিন্দরকে গ্রেফতার করা হয়। সেই সাথে পান্ডেকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পাঞ্জাবের ভাটিন্ডার বাসিন্দা বলবিন্দর আর পান্ডে বিজেপির ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং-এর সহযোগী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার একটি ভিডিওতে বলবিন্দরের ওপরে পুলিশের লাঠিচার্জ এবং টেনে নিয়ে যেতে দেখা যায়। সেই ভিডিওতে এও দেখা যায় যে, পুলিশ টেনে তার পাগড়ি খুলে দিচ্ছে, আর বলবিন্দর পাগরী সামলে মার খাচ্ছেন। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, জোর করে তার পাগড়ি “খুলে ফেলা হয়েছে”।
এই দাবি অস্বীকার করে রাজ্য পুলিশ টুইট করেছে: “সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি গতকালের বিক্ষোভে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিল। আমাদের কর্মকর্তা [সংযুক্ত ভিডিওতে দৃশ্যমান] কোন প্রচেষ্টা ছাড়াই পাগরি [পাগড়ি] স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়ে গিয়েছিল। এটা কখনই কোন সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
গ্রেফতারের আগে শিখ ব্যক্তির একটি ছবি উল্লেখ করে পুলিশ বলেছে: “পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সব ধর্মকে সম্মান করে। অফিসার বিশেষভাবে তাকে গ্রেফতারের আগে তার পাগরি ফিরিয়ে দিতে বলেন। সংযুক্ত ছবিটি তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার ঠিক আগে ক্লিক করা হয়েছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা আমাদের কর্তব্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই ঘটনা ক্রিকেটার হরভজন সিং-এর মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, যিনি দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
“প্রিয়াংশু পান্ডের নিরাপত্তায় পোস্ট করা বলবিন্দর সিং এর পাগড়ি টানা… বেঙ্গল পুলিশের বর্বরতা দেখাচ্ছে। @MamataOfficial, দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিন…” তিনি টুইট করেন।
এসএডি-এর মুখপাত্র মনজিন্দর সিং সিরসা দাবি করেছেন যে দোষী পুলিশদের আইপিসি ধারা ২৯৫এ (ধর্মীয় ক্ষোভ উগরে দেওয়ার উদ্দেশ্যে) ধারায় মামলা দায়ের করা হোক।
বিজেপির জাতীয় সম্পাদক অরবিন্দ মেনন বলেছেন যে এই ঘটনা “শিখ সম্প্রদায়কে অপমান করেছে”। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, নিরাপত্তা রক্ষীর কাছে একটি ‘লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক’ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকের লাইসেন্স শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি জেলায় সীমাবদ্ধ ছিল।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, শিখ সম্প্রদায়ের প্রায় ৫০ জন সদস্য আজ কলকাতা শহরে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
এসপ্ল্যানেড ক্রসিং-এর কাছে সেন্ট্রাল এভিনিউতে স্লোগান দেয়-
“মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দয়া করে ব্যাখ্যা করুন কেন একজন শিখের পাগড়ি আপনার পুলিশ টেনে নিয়ে গেছে। আপনার ব্যাখ্যা করা উচিত অথবা চেয়ার ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।”