দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবস্থিত সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দাবি করেছেন যে তারা ২০০৮ সালে সুদানে বিস্ফোরিত একটি হীরা খচিত উল্কাপিণ্ডের পিছনে রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছেন। গবেষকদের মতে, উল্কাপিণ্ডটি ছিল একটি দৈত্যাকার গ্রহাণুর অংশ, যা বামন গ্রহ সেরেসের সমান আকারের ছিল।
উল্কাপিণ্ডটি নাসা প্রথম দেখতে পায় এবং নাসা অনুসারে এই মহাজাগতিক খণ্ডের ব্যাস ছিল ১৩ ফুট। এর ওজন ছিল ৮,২০০ কেজি। পরে একদল গবেষক একটি ইনফ্রারেড মাইক্রোস্কোপের অধীনে ৫০ গ্রাম উল্কাপিণ্ড বিশ্লেষণ করে দেখেন যে উল্কাপিণ্ডের একটি অনন্য খনিজ মেকআপ ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে যে উল্কাপিণ্ডের অ্যাম্ফিবোল ছিল যা বিকাশের জন্য জলের দীর্ঘমেয়াদী সংস্পর্শে প্রয়োজন। কলোরাডোর বোল্ডারের সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গ্রহ ভূতত্ত্ববিদ ভিকি হ্যামিলটন বিবৃতিতে বলেন যে, এই উল্কাপিণ্ডের মধ্যে কিছু খনিজ পদার্থ কম তাপমাত্রায় এবং চাপের মুখে জলের সংস্পর্শে আসার প্রমাণ সরবরাহ করে। অন্যান্য উল্কাপিণ্ডের গঠন জলের অনুপস্থিতিতে উত্তপ্ত হয়ে যায় কিন্তু এটি তেমন হয়নি।
আরো পড়ুনঃ ১৫০ বছর আগে আবিষ্কৃত জীবাশ্মের জানা গেল পরিচয়, বলা হচ্ছে এই হল সমুদ্রের সেই ড্রাগন!
গবেষকরা বলেন যে সুদানের উপর বিস্ফোরিত উল্কাপিণ্ড-এর মাত্র ৪.৬% খণ্ডাংশ পৃথিবীতে পাওয়া গেছে। এই কালো পাথর কার্বনেসিয়াস চোনড্রাইট দ্বারা গঠিত। মহাকাশ-এর এই পাথর ছাড়াও জৈব যৌগ, খনিজ এবং জলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন গ্রহাণু রাইয়ুগু এবং বেন্নু থেকে জাপান হায়াবুসা-২ এবং নাসা ওসিরিস-রেক্স মহাকাশযান থেকে সংগৃহীত নমুনা থেকে নতুন কিছু আবিষ্কার করা হবে।
যদি হায়াবুসা-২ এবং ওসিরিক্স-রেক্স-এর নমুনার গঠন এই উল্কাপিণ্ড-এর থেকে আলাদা হয়, তার মানে হতে পারে যে তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য তাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মাধ্যমে নিষ্কাশন, ট্রানজিট এবং প্রবেশ প্রক্রিয়া থেকে বেঁচে থাকতে ব্যর্থ হতে পারে, অন্তত তাদের মূল ভূতাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটে। হ্যামিলটন মনে করেন যে সৌরজগতে আমাদের উল্কাপিণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্বনেশিয়াস চোনড্রাইট উপাদান আছে। জৈবপ্রাণ গঠনের বুনিয়াদি এই উপাদান মহাকাশের অনেক গ্রহাণুর দেহেই ছড়িয়ে আছে, কিন্তু যথাযথ বায়ুমণ্ডল না পাওয়ায় তার বিকাশ হচ্ছে না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই কার্বণ যৌগ আবিষ্কারের সঙ্গে ব্রহ্মাণ্ড সৃস্টিরহস্যের দিকে আরো একধাপ এগিয়েছে বলেই মত বিজ্ঞানীদের।