দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বৈশ্বিক কোভিড অতিমারীতে পরিবর্তণ হয়েছে কাজের ধরণের। একটি সর্বভারতীয় সমীক্ষা বলছে, নিউ নরমাল’এ মাস্ক, স্যানিটাইজার আপনজন হলেও সংক্রমণের আতঙ্কে গণপরিবহণ পরিষেবার ব্যবহার এড়াতে চাইছেন অধিকাংশ অফিসযাত্রী। এর পরিবর্তে তাঁরা বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ সারতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন।
সম্প্রতি সারা দেশের মেট্রো শহরে কর্মরত চাকুরিজীবিদের ওপরে একটি সমীক্ষা চালান অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বার্স অফ কামার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (অ্যাসোচ্যাম) এবং প্রাইমাস পার্টনার্স। এই দুই সংস্থার যৌথ সমীক্ষার রিপোর্ট এ দেখা গিয়েছে, চাকুরিজীবীদের এক-চতুর্থাংশ (১/৪) বাড়ি থেকেই অফিসের কাজ করতে আগ্রহী অথবা নিজ সংস্থার প্রয়োজন অনুযায়ী কাজের সময়ে রদবদল করার নীতি নির্ধারণে বিশ্বাসী।
এই সমীক্ষা চালানো হয় দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, কলকাতা, আমদাবাদ ও পুনে শহরের চাকুরীজীবীদের ওপরে এই সমীক্ষা চালানো হয়।
এই অভিনভ সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, লকডাউন উঠে যাওয়ার পরে ১৮% চাকরিজীবী পুরোপুরি বাড়ি থেকে কাজ করতে বেশি আগ্রহী, ৫৬% আংশিক ভাবে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করায় আগ্রহী এবং ২৬% অফিসে গিয়ে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন।
এই সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের মধ্যে ৭৯% লকডাউন পর্বে বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করেছেন, ছুটিতে বাড়ি থেকে কাজ করেছেন ১১% এবং অফিসে গিয়ে কাজ করেছেন ১০% কর্মী।
রিপোর্ট আরও জানাচ্ছে যে, ‘কর্মীরা বাড়ি বসে কাজ করায় আদতে লাভবান হয়েছে সংস্থাও। বাড়ি বসে কাজ করার কারণে অফিসের জন্য করা অনেকগুলো খরচ বেঁচে যাচ্ছে, যার মধ্যে ইলেকট্রিক বিল, ইন্টারনেটের বিল ও অন্যান্য রোজকার খরচ বাবদ যে অর্থ বাঁচছে, তা কর্মীদের সুবিধায়, প্রশিক্ষণে ও গবেষণা খাতে ব্যয় করা যাচ্ছে। তা ছাড়া দেশের যে কোনও অংশ থেকেই কর্মী নিয়োগ করতেও কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।’
সমীক্ষায় উদাহরণ হিসেবে পুনের এক তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ওই সংস্থা ইতিমধ্যে ইন্দোর, ভোপাল, জবলপুর, বিজয়ওয়াড়া, চণ্ডীগড়, পটনা ও নাসিক থেকে কর্মী নিয়োগ করেছে এবং তাঁদের বাড়ি থেকে পাকাপাকি কাজের সুবিধা দেওয়ায় অফিসের কোনও সমস্যাও দেখা দেয়নি।
এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, গণ পরিবহণ পরিষেবা অনেকাংশে চালু হলেও ৭৩% চাকরিজীবী এখনও বাড়ি থেকেই কাজ করতে চান। এর মূল কারণ গণ পরিবহনে কোভিড সংক্রমণের ভীতি। এই সমীক্ষার পর দেশের বড় শহরগুলিতে গণপরিবহণ ব্যবস্থারও আমূল পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বলেও রিপোর্টে বিশেষ অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রাইমাস পার্টনার্স সংস্থার সিইও নিলয় ভার্মার মতে, যাত্রীদের আস্থা ফিরে পেতে বেশ কিছু কড়া স্বাস্থ্য নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে গণপরিবহণ সংস্থাগুলিকে। সেই সঙ্গে যুক্ত করতে হবে প্রযুক্তিগত সহায়তা, যা যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি করবে। তবে যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে গিয়ে বেসামাল সংস্থাগুলি কী ভাবে ভবিষ্যতে পরিবহণ পরিষেবা সচল রাখতে পারবে, তা এখনও গবেষণার বিষয় বলে জানিয়েছে সমীক্ষা রিপোর্ট।