দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শুধু শ্বাসযন্ত্র নয়, এর পাশাপাশি যে এটি অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি সাধন করতে পারে তা কয়েকটি গবেষণায় আগেই দাবি করা হয়েছে। আর যত দিন এগোচ্ছে, একে একে শরীরের বিভিন্ন অংশে করোনাভাইরাসের কুপ্রভাব সামনে আসছে। এবার দিল্লির এইমসের তরফে জানানো হল এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। করোনা সংক্রমণের কারণে ১১ বছরের এক কিশোরীর মস্তিষ্কের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর তা হওয়ার ফলে ওই কিশোরীর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গিয়েছে।
এই মূহুর্তে ওই কিশোরীর স্বাস্থ্যের পরিস্থিতি নিয়ে AIIMS এর স্নায়ুরোগ বিভাগের তরফে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। আর তা শীঘ্রই প্রকাশ করার পরিকল্পনা চলছে। রিপোর্টের খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘১১ বছরের এক কিশোরীর কোভিড ১৯ সংক্রমণের প্রভাবে অ্যাকিউট ডিমাইলেনেটিং সিন্ড্রোমের (ADS) হদিশ পাওয়া গিয়েছে। শিশুদের বয়সসীমার মধ্যে এই প্রথম এরকম ঘটনা সামনে এল।’
বিশেষজ্ঞরা কী পেয়েছেন তাদের গবেষণাতে, দেখা গিয়েছে মায়েলিন নামক একটি সুরক্ষামূলক আস্তরণ দিয়ে ঢাকা থাকে আমাদের স্নায়ু। যা মস্তিষ্ক থেকে কোনও বার্তা দ্রুত ও নির্ঝঞ্জাটভাবে শরীরের মধ্যে দিয়ে যেতে সাহায্য করে। আর অ্যাকিউট ডিমাইলেনেটিং সিন্ড্রোমে সেই মায়েলিন এবং মস্তিষ্কের মধ্যে সংকেত আদান প্রদান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে দৃষ্টি, পেশির নড়াচড়া সহ শরীরের বিভিন্ন অনুভূতির উপরও প্রভাব পড়ে।
AIIMS দিল্লী’র শিশুরোগ বিভাগের শিশু স্নায়ুরোগ ডিভিশনের প্রধান শেফালি গুলাটি বলেন, ‘দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ওই কিশোরী আমাদের কাছে এসেছিল। এমআরআইতে এডিএস (ADS) ধরা পড়েছে। এটা একটা নয়া বিষয়। তবে আমরা এখন জানি যে (করোনা) ভাইরাস মূলত মস্তিষ্ক ও ফুসফুসে প্রভাব ফেলে। আমরা এই রিপোর্টটি প্রকাশের পরিকল্পনা করছি, কারণ আমরা প্রমাণ পেয়েছি যে এটা কোভিড-১৯-এর প্রভাব।’
সূত্রের খবর ডক্টর শেফালি গুলাটির অধীনে ওই কিশোরীর চিকিৎসা চলছিল। ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে তার অবস্থার উন্নতি হয়। ৫০ শতাংশ দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসার পর তাকে হাসপাতাল থেকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি ১৩ বছরের এক করোনা আক্রান্ত কিশোরীর চিকিৎসা চলছে এইমসে। ওই কিশোরীর জ্বর ও এনসেফেলোপ্যাথির সমস্যা হচ্ছিল। সেটাও করোনার সংক্রমণের কারণে হয়েছে কিনা তা চিকিৎসকরা খুঁটিয়ে দেখছেন।